শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হওয়া সব মা-বাবার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি তাদের ভবিষ্যতের ভিত্তি তৈরি করে। শিশুর সুস্থতা এবং সঠিক বিকাশের জন্য স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা খুবই প্রয়োজনীয়। বর্তমানে জাঙ্ক ফুড, গ্যাজেটের প্রতি আসক্তি এবং অনিয়মিত রুটিনের কারণে শিশুর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস শেখানোর মাধ্যমে আমরা তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারি। নিচে কিছু এমন অভ্যাসের কথা আলোচনা করা হচ্ছে, যা শিশুদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
১. শারীরিক কার্যকলাপ
আজকাল শিশুরা বেশিরভাগ সময় মোবাইল ফোন, টিভি বা কম্পিউটারে সময় কাটায়, যার ফলে তাদের শারীরিক কার্যকলাপ কমে গেছে। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে ১ ঘণ্টা শারীরিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত করা উচিত। যোগব্যায়াম, সাইকেল চালানো, দৌড়ানো বা বাইরে খেলাধুলা করার মতো অভ্যাস শিশুদের শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। এটি কেবল তাদের শারীরিক বিকাশে সাহায্য করবে না, বরং মানসিক স্বাস্থ্যও উন্নত করবে।
২. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
শিশুদের শুরু থেকেই সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস গড়ে তুলুন। তাদের খাদ্যতালিকায় ফলমূল, শাকসবজি, দুধ, ডিম, গোটা শস্য এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। জাঙ্ক ফুড, কোল্ড ড্রিংকস এবং অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার পরিহার করা উচিত। শিশুদের বুঝিয়ে বলুন, স্বাস্থ্যকর খাবার তাদের শরীরকে শক্তিশালী এবং উদ্যমী রাখে। এছাড়া, তাদের নিয়মিত সময়ে খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং খাওয়ার গুরুত্ব বুঝতে সাহায্য করুন।
৩. প্রচুর পানি পান করা
শিশুদের প্রচুর পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করুন। পানি শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে সাহায্য করে। শিশুদের বোঝান, কোল্ড ড্রিংকস এবং প্যাকেটজাত জুসের পরিবর্তে পানি পান করা অনেক বেশি উপকারী। সারাদিনে কমপক্ষে ৬-৮ গ্লাস পানি পান করার অভ্যাস তাদের হাইড্রেটেড ও সুস্থ রাখবে।
৪. পর্যাপ্ত ঘুম
শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের সময়মতো ঘুমাতে ও ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ছোট শিশুদের ৯-১১ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। ঘুমের অভাব শিশুদের মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি এবং মেজাজের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন বা টিভি ব্যবহার না করাই ভালো, কারণ এগুলো ঘুমের মানে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
৫. স্বাস্থ্যবিধির যত্ন
সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের হাত ধোয়া, গোসল করা, দাঁত ব্রাশ করা এবং পরিষ্কার পোশাক পরার অভ্যাস গড়ে তুলুন। খাওয়ার আগে এবং টয়লেটে যাওয়ার পরে হাত ধোয়ার অভ্যাস তাদের রোগ থেকে দূরে রাখবে। পাশাপাশি, শিশুদের আশেপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে উৎসাহিত করুন।
এভাবে সঠিক অভ্যাস গড়ে তুললে, শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের পথ সুগম হবে।