“শ্রমিকেরা দাবি করছেন অতিরিক্ত ১০ শতাংশ, মালিকেরা দিতে ইচ্ছুক ১ শতাংশ”

শ্রমিকপক্ষ তৈরি পোশাকশিল্পের নিম্নতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত বার্ষিক ৫ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্টের পাশাপাশি অতিরিক্ত ১০ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছিল। তবে মালিকপক্ষ এই দাবির বিপরীতে ১ শতাংশ অতিরিক্ত বৃদ্ধি (মোট ৬ শতাংশ) প্রস্তাব করেছে। শ্রমিকপক্ষ মালিকদের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।


যে কোন ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
৫০% পর্যন্ত ডিসকাউন্টে তৈরি করুন আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য
কর্পােরেট ওয়েবসাইট
ই-কমার্স ওয়েবসাইট অথবা নিউজপোর্টাল  ওয়েবসাইট।

আজ রোববার, শ্রম মন্ত্রণালয়ে গঠিত কমিটির তৃতীয় বৈঠকে মালিকপক্ষ এই প্রস্তাব উত্থাপন করে। সভায় শ্রম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সবুর হোসেনের সভাপতিত্বে মালিক ও শ্রমিকপক্ষের ছয়জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন—নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিজিএমএ-এর সহায়ক কমিটির সদস্য এ এন এম সাইফুদ্দিন, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের মহাসচিব ফারুক আহাম্মদ, শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুব বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আখতার, এবং বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি কবির আহমেদ।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, মালিকপক্ষ তাদের লিখিত প্রস্তাবে বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধির ৬ শতাংশ হারে প্রস্তাব দেয়, যার মধ্যে ১ শতাংশ অতিরিক্ত বৃদ্ধি অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে শ্রমিকপক্ষ এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ২৮ নভেম্বর পরবর্তী বৈঠকে ইনক্রিমেন্ট বিষয়ে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মোহাম্মদ হাতেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘‘দুই বছর আগে মূল্যস্ফীতি ৫-৬ শতাংশের মধ্যে ছিল। সরকার মূল্যস্ফীতি কমানোর আশ্বাস দিয়েছে, সেক্ষেত্রে ৬ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের প্রস্তাব করা হয়েছে। যদি মূল্যস্ফীতি কমে না আসে, তবে পরবর্তী সময়ে নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠনের সময় তা বিবেচনা করা হবে।’’

শ্রমিকনেতা বাবুল আখতার বলেন, ‘‘মালিকপক্ষের প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এ কারণে তা প্রত্যাখ্যান করেছি। যদি ইনক্রিমেন্ট বিষয়ে গ্রহণযোগ্য সমাধান না হয়, তবে শ্রমিক অসন্তোষের ঝুঁকি রয়েছে।’’

এদিকে, গত আগস্টে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গাজীপুর এবং সাভারের আশুলিয়ায় শ্রমিকরা টানা বিক্ষোভ শুরু করেন। এর প্রেক্ষিতে, সেপ্টেম্বরে মালিক ও শ্রমিকনেতারা ১৮টি বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছান। এর মধ্যে, মজুরি পুনর্মূল্যায়ন ছয় মাসের মধ্যে এবং বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। এরপর, শ্রম মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করে যা ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ ও বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করে।

গত ৪ নভেম্বর, কমিটির দ্বিতীয় সভায় শ্রমিকপক্ষ ১৫ শতাংশ বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয়। তারা যুক্তি দেয় যে, ঐতিহাসিকভাবে পোশাকশ্রমিকদের মজুরি জীবনযাপনের জন্য যথেষ্ট নয়, যা বৈষম্য সৃষ্টি করছে এবং সাম্প্রতিক অস্থিরতার অন্যতম কারণও।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।