সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে সরানোর জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাঠানো চিঠি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও পায়নি। গতকাল সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, “আমাদের কাছে এ-সংক্রান্ত কোনো ডকুমেন্ট আসেনি। সুতরাং, এখানে প্রিম্যাচিউরড স্টেটমেন্ট দেওয়া ঠিক হবে না। চিঠি আমরা এখনও পাইনি, আসেনি।” একই সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি সম্পর্কে কোনো হালনাগাদ তথ্য দিতে পারেননি তিনি।
এর আগে দুদক জানায়, পুতুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পররাষ্ট্র ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হবে। ১৯ জানুয়ারি দুদকের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছিলেন, শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুলের দুর্নীতির একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করা হয়েছে এবং দুই-এক দিনের মধ্যে চিঠি পাঠানো হবে।
দুদকের তদন্তে জানা গেছে, পুতুলকে ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার এবং নিয়মবহির্ভূত কার্যক্রম ঘটেছে। তার যোগ্যতা সম্পর্কিত তথ্যাদি সঠিক ছিল না, এবং সে সময় তিনি কানাডার নাগরিক ছিলেন।
দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা সত্ত্বেও ডব্লিউএইচওর পদে আসা নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা সম্পর্কে এক প্রশ্নে মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, “দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়টি সে সময়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা হয়তো জানাতে পারবেন। তবে, আমাদের কাছে এ-সংক্রান্ত কোনো ডকুমেন্ট আসেনি।” দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়ে আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, “সবাই জানে, দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকলে সরকারি কাজে নিযুক্ত হওয়া যায় না; এটি সাধারণ নিয়ম। কোথায় এবং কীভাবে ব্যত্যয় ঘটেছে, সেটা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো দেখতে পারে।”
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর শেখ হাসিনা ভারত চলে যান, এবং বর্তমানে তিনি সেখানে অবস্থান করছেন। পুতুলের কর্মস্থল নয়াদিল্লিতে, যেখানে তিনি ডব্লিউএইচও-তে দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে, এবং তার মেয়ে পুতুলের বিরুদ্ধে কিছু মামলা চলমান রয়েছে।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, পুতুলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে, এবং এমন একজন ব্যক্তি ডব্লিউএইচওর পদে থাকা দেশের জন্য সম্মানজনক নয়। এর ফলে দেশের সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এদিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে রফিকুল আলম বলেন, “যে কোনো দেশ সন্দেহভাজন অপরাধীর তথ্য দিয়ে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করতে পারে। এটি আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানার সমতুল্য।” রেড অ্যালার্ট সম্পর্কে তার কাছে কোনো হালনাগাদ তথ্য নেই বলেও তিনি জানান।