শিক্ষার্থী ও জনগণের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশটিতে থাকার মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়েছে। ভারতের আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এটি করা হয়েছে বলে দেশটির একাধিক সংবাদ মাধ্যম জানায়।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লির ফরেন রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (এফআরআরও) শেখ হাসিনার ভারতে থাকার অনুমতির মেয়াদ বাড়িয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ করেননি এবং বিস্তারিত তথ্যও দেয়নি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফরেন রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসে আসা আবেদনের ভিত্তিতে শেখ হাসিনাকে এই সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। এর আগে এফআরআরও-এর মাধ্যমে শেখ হাসিনার ভারতে থাকার বৈধতা দেওয়া হয়েছিল, কারণ ভারতের উদ্বাস্তু বিষয়ক আইন নেই।
শেখ হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, একদিন আগে বাংলাদেশে শেখ হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়, যার মধ্যে জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ছিল। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ও উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এই তথ্য প্রকাশ করেন। এর ফলে শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানের বৈধতা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে।
এছাড়া, আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে গুমের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সোমবার, প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্যানেল এই আদেশ দেয়।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গত ১৫ বছরে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছিল। আদালত শুনানি শেষে শেখ হাসিনা, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারেক সিদ্দিকীসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। তাদের মধ্যে যাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে, তাদের ১২ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, ইন্টারপোলের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশে ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে ভারতীয় এফআরআরও অফিসের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার খবর এসেছে।