বাংলাদেশের ফুটবলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভেন্যুর নাম কী?
বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, আমাদের সবচেয়ে প্রভাবশালী ভেন্যুর নাম কী? উত্তরটি দেওয়া খুব সহজ নয়, কারণ এই ভেন্যুটি বহু ইতিহাসের সাক্ষী। লাল-সবুজের ফুটবল এ পর্যন্ত পাঁচটি বড় সাফল্য পেয়েছে, এর মধ্যে একটি দেশেই এবং বাকি চারটি বিদেশে। দেশের একমাত্র বড় শিরোপা জিতেছে ২০০৩ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে, যেখানে আমিনুল-রজনীরা সাফ শিরোপা অধিকার করেন।
দেশের বাইরে প্রথম শিরোপাটি এসেছে ১৯৯৫ সালে মিয়ানমারে, মোনেম মুন্নার নেতৃত্বে। এরপর তিনটি শিরোপা এসেছে নেপালের দশরথ রঙ্গশালায়। ১৯৯৯ সালে বিপ্লব-আলফাজদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে প্রথম শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে।
কিন্তু ২০২২ সালে বাংলাদেশের মেয়েরা এখানেই ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতে, যা দশরথ রঙ্গশালাকে বিশেষভাবে স্মরণীয় করে তোলে। সাবিনা খাতুনদের কল্যাণে বাংলাদেশ এখানে দুইবার দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হয়েছে।
দশরথ রঙ্গশালা, যা নেপালের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শহীদ দশরথ চাঁদ ঠাকুরির নামে প্রতিষ্ঠিত, ১৯৫৬ সালে নির্মিত। কাঠমান্ডুর ত্রিপুরেশ্বর এলাকায় অবস্থিত এই স্টেডিয়ামে বিভিন্ন ধরনের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল দশরথে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করেছিল, এবং অনেকের মতে এটি তাদের দ্বিতীয় বাড়ির মতো। নেপাল বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে, যেখানে বাংলাদেশি খেলোয়াড়রা নিয়মিত খেলছেন।
এদিকে, ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সংস্কারের কাজ চললেও দশরথ দ্রুত উঠে দাঁড়িয়েছে। ১৯৯৯ সালে সাফ গেমস এবং ২০১২ সালে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের মতো বড় টুর্নামেন্ট এখানে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এই স্টেডিয়ামে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কনসার্টও অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেমন ব্রায়ান অ্যাডামসের রক কনসার্ট।
তবে, দশরথের একটি অদ্ভুত ব্যাপার হলো, এখানে আজও কোনো প্রেসবক্স নেই। সাংবাদিকদের খোলা গ্যালারিতে বসে কাজ করতে হয়, যা একটি চ্যালেঞ্জ হলেও খেলার মাঠের কাছ থেকে দর্শনের আনন্দও দেয়।
সুতরাং, দশরথ রঙ্গশালা বাংলাদেশের ফুটবলারদের হৃদয়ে গেঁথে গেছে, এবং এটি বাংলাদেশের ফুটবলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে অটুট রয়েছে।