ভারতের প্রভাবশালী নেহরু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ইন্দিরা গান্ধী, যিনি রাজনীতির সঙ্গে ছিলেন জন্মসূত্রেই যুক্ত। তরুণ বয়সে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং ৪৯ বছর বয়সে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। সরকারপ্রধান ও দলীয় নেতা হিসেবে তিনি কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন, যা তাকে ‘ভারতের লৌহমানবী’ উপাধি দেয়। তার নেতৃত্ব ও বিচক্ষণতা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও প্রশংসিত হয়।
১৯৮৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নেন ইন্দিরা, যার পরিণতি tragically তার জীবনকে নেয়। ১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর, তার নিজের দুই দেহরক্ষীর গুলিতে তিনি নিহত হন।
ইন্দিরার জন্ম ১৯১৭ সালের ১৯ নভেম্বর। তার বাবা পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু, ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, এবং মা কমলা নেহরু। শৈশব থেকেই স্বাধীনতা সংগ্রামে জড়িত ছিলেন তিনি এবং তরুণ বয়সে কারাগারেও যেতে হয়। তিনি শান্তিনিকেতনে ও অক্সফোর্ডের সামারভিল কলেজে পড়াশোনা করেন, তবে শেষ করতে পারেননি।
১৯৩৮ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগদান করেন। ১৯৪২ সালে ফিরোজ গান্ধীকে বিয়ে করেন। ইন্দিরা ১৯৫৫ সালে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯৬৪ সালে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন।
১৯৬৬ সালের ১১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যুর পর কংগ্রেসের নেতা হিসেবে ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকা বিশেষভাবে স্মরণীয়।
তবে ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থার কারণে তার জনপ্রিয়তা কমে যায় এবং ১৯৭৭ সালে নির্বাচনে পরাজিত হন। তবে ১৯৮০ সালের নির্বাচনে তিনি আবারও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
ভারতের রাজনৈতিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য ইন্দিরা ‘অপারেশন ব্লু স্টার’ নামক সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেন, যা দেশজুড়ে বিতর্কের সৃষ্টি করে।
১৯৮৪ সালের ৩০ অক্টোবর তিনি একটি ভাষণে বলেন, “আমি গর্বিত যে আমি দেশের মানুষের সেবায় কাজ করতে পেরেছি।” পরের দিন, তার দেহরক্ষীদের গুলিতে তিনি নিহত হন।
ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর তার ছেলে রাজীব গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন, তবে তিনিও পরবর্তীতে একই ভাগ্য বরণ করেন।