মধ্যপ্রাচ্যের সংকট: ইসরায়েলের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের থাড প্রস্তুতি
মধ্যপ্রাচ্যের সংকট ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। ফিলিস্তিনের গাজা, ইরান, লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ইয়েমেনের হুতিদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে ইসরায়েল। এই পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অত্যাধুনিক থাড (থার্মাল হাই-অল্টিচিউড এরিয়া ডিফেন্স) ব্যবস্থা পেতে চলেছে দেশটি। এটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা।
থাডে ব্যবহৃত অত্যাধুনিক রাডার এবং শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্রগুলো শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট ও যুদ্ধবিমান ধ্বংস করতে সক্ষম। এটি ১৫০ থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিমেষেই ধ্বংস করতে পারে এবং এর সফলতার হার অত্যন্ত উচ্চ
যুক্তরাষ্ট্রের সি-১৭ এবং সি-৫ উড়োজাহাজের মাধ্যমে থাড দ্রুত কোনো স্থানে মোতায়েন করা যায়। এটি স্বল্প ও মধ্যপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে সক্ষম, এবং মধ্য ও দূরপাল্লার শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্রও নস্যাৎ করতে পারে। থাড বায়ুমণ্ডলের ভেতরে ও বাইরে, উভয় জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসের সক্ষমতা রাখে।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, তাদের কাছে বর্তমানে সাতটি থাড ব্যাটারি রয়েছে, প্রতিটি ব্যাটারিতে সাতটি ট্রাক এবং প্রতিটি ট্রাকে আটটি ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এছাড়া, প্রতিটি ব্যাটারিতে একটি শক্তিশালী রাডার ব্যবস্থা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে। সম্প্রতি ইসরায়েলে একটি ব্যাটারি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা ইরানের হামলার পর দেশের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করবে।
থাড ব্যবস্থাটি পরীক্ষামূলকভাবে লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসে কখনোই ব্যর্থ হয়নি এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে সক্ষম। তবে, ইসরায়েলে থাডের মোতায়েনের সঠিক সময় এখনও জানানো হয়নি।
থাডের অত্যাধুনিক রাডার ব্যবস্থা, ‘এএন/টিপিওয়াই-২’, শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্রের তথ্য সংগ্রহ করে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্ট্রাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মিসাইল থ্রেট প্রজেক্টের মতে, থাডের পরীক্ষা সাফল্যজনক।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে থাড এক নতুন স্তরের নিরাপত্তা যোগ করবে। দেশটির হাতে ডেভিডস স্লিং, অ্যারো-২, অ্যারো-৩ এবং আয়রন ডোমের মতো শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে, যা থাডের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করবে।
এটি নতুন নয় যে, যুক্তরাষ্ট্র পূর্বে ২০১৯ সালে একটি মহড়ার জন্য থাড মোতায়েন করেছিল এবং ২০১৭ সালে উত্তর কোরিয়ার হুমকির মুখে দক্ষিণ কোরিয়ায়ও থাডের ব্যাটারি পাঠিয়েছিল। বর্তমানে গুয়াম দ্বীপেও এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মোতায়েন রয়েছে।