জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে কিশোরীদের এই বছর এক ডোজ হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা দেওয়া শুরু হচ্ছে। ২৪ অক্টোবর থেকে ঢাকা ছাড়া সাতটি বিভাগে স্কুল এবং স্কুলের বাইরে বিনা মূল্যে এই টিকা প্রদান করা হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) অধীনে এই কার্যক্রম চলবে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত।
গত বছর প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে বিনা মূল্যে এইচপিভি টিকার প্রদান শুরু হয়েছিল, যা প্রথমে ঢাকা বিভাগেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (ইপিআই অ্যান্ড সার্ভিল্যান্স) মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন জানান, পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রীরা এবং ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী স্কুলের বাইরে থাকা কিশোরীরা এই কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আগামী বছর থেকে এই টিকা সরকারিভাবে নিয়মিত কার্যক্রমের আওতায় আসবে। স্কুলের ক্ষেত্রে শুধু পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীরা টিকা পাবে, এবং সুবিধাবঞ্চিত কিশোরীরা ১০ বছর বয়সীদের মধ্যে টিকা গ্রহণ করতে পারবে।
প্রতি বছর প্রায় ৫ হাজার নারী জরায়ুমুখ ক্যানসারে মারা যান এবং ১১ জন প্রতি লাখে নতুন করে আক্রান্ত হন। দেশের নারীদের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যানসার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. আনোয়ার হোসেন আকন্দ জানান, ২৪ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া টিকা কার্যক্রমের জন্য ১৬টি মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে। ঢাকা ছাড়া সাতটি বিভাগের ৫১টি জেলায় এই কার্যক্রম চলবে।
গত বছর ঢাকায় ১৫ লাখ ৮ হাজার ১৮৩ জনকে এইচপিভি টিকা দেওয়া হয়েছিল, যা ৭৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। এবার সাত বিভাগে মোট ৬২ লাখ ১২ হাজার ৫৫৯ কিশোরীকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে, যার মধ্যে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৬৭৬ কিশোরী স্কুলের বাইরে রয়েছে।
টিকা গ্রহণের জন্য অনলাইন নিবন্ধন করতে হবে এখানে। তবে যারা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ পাননি, তাদেরও বিশেষ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এ বছর অন্তত ৯৫ শতাংশ কিশোরীকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, যার জন্য কওমি মাদ্রাসা ও ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলো থেকে সহযোগিতা নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকা নিরাপদ ও কার্যকর। চিকিৎসকরা জানান, কিশোরীদের টিকার মাধ্যমে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে ক্যানসার প্রতিরোধ সম্ভব। তবে ৩০ বছরের পর ভায়া পরীক্ষার মাধ্যমে ঝুঁকি শনাক্ত করা উচিত।
অধ্যাপক ফেরদৌসী বেগম জানিয়েছেন, জরায়ুমুখ ক্যানসারের কারণে রোগীদের ভোগান্তি মারাত্মক। তাই কিশোরীদের এই টিকা দেওয়ার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।