দৈনন্দিন জীবনে হাতের গ্রিপের গুরুত্ব এবং এর শক্তি বৃদ্ধি
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অধিকাংশ কাজই হাতে করতে হয়—রান্না, খাওয়া, লেখালেখি, দরজা বা বয়ামের মুখ খোলা, এসব কিছুতেই হাতের গ্রিপ বা ধরার শক্তির প্রয়োজন। কিন্তু বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এই গ্রিপের শক্তি কমে যেতে থাকে, যার ফলে সাধারণ কাজগুলো যেমন বয়াম খোলা বা বোতাম লাগানো, সেগুলোর জন্যও অনেক সময় অন্যের সাহায্য প্রয়োজন হয়।
হাতের গ্রিপের শক্তি কিভাবে নির্ধারণ হয়?
হাতের শক্তি নির্ভর করে বেশ কিছু বিষয়াবলীর উপর:
১. শারীরিক দুর্বলতা: শরীরের দুর্বলতা হাতে শক্তি কমিয়ে দিতে পারে।
২. হাড়ের ঘনত্ব: শরীরের হাড়ের গঠন—মোটা বা চিকন—হাতের শক্তির ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। সাধারণত, যাঁদের হাড় মোটা, তাঁদের গ্রিপ শক্তি চিকন হাড়ের মানুষের তুলনায় বেশি থাকে।
৩. হাত ভাঙা: পূর্বে যদি হাত ভেঙে থাকে, তবে সে ক্ষেত্রে হাতের শক্তি কমে যায়।
৪. অপুষ্টি: পুষ্টিহীনতায় ভোগা ব্যক্তিদের শারীরিক দুর্বলতার পাশাপাশি হাতের শক্তিও দুর্বল হয়।
৫. স্ট্রোক: স্ট্রোকের ফলে হাতের শক্তি কমে যেতে পারে।
৬. বয়স: বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে শারীরিক দুর্বলতা বাড়ে, ফলে হাতের শক্তি কমে যায়।
৭. অন্যান্য: স্মৃতিভ্রংশ, বিষণ্নতা (ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডার), অনিদ্রা (ইনসমনিয়া)—এইসব সমস্যা হাতের শক্তি কমিয়ে দেয়।
হাতের শক্তি বাড়ানোর উপায়
১. পুষ্টিকর খাবার: পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ শরীরের শক্তির পাশাপাশি হাতের শক্তিও বৃদ্ধি করে।
২. ব্যায়াম: নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম, বিশেষ করে হাতের জন্য করা ব্যায়াম, গ্রিপ শক্তি বাড়াতে সহায়ক। তবে, কোনো ঝুঁকি এড়াতে একজন প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে ব্যায়াম করা উচিত। শুধুমাত্র গ্রিপের ব্যায়াম নয়, পুরো হাতের ব্যায়ামও গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, অস্থিসন্ধির রোগ, যেমন রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস থাকলে, চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত, অন্যথায় ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।
৩. ফিজিওথেরাপি: বিশেষ করে স্ট্রোক পরবর্তী সময়ে হাতের শক্তি বাড়াতে ফিজিওথেরাপি অপরিহার্য। প্রশিক্ষিত ফিজিওথেরাপিস্টের সহায়তা গ্রহণ করলে দ্রুত উন্নতি সম্ভব।
এভাবে নিয়মিত অভ্যাস এবং যত্নের মাধ্যমে হাতের গ্রিপের শক্তি বাড়ানো সম্ভব।