“সোনার কমোড চুরির অভিযোগে চক্রের সদস্যরা দোষী সাব্যস্ত”

ইংল্যান্ডের ব্লেনইম প্রাসাদে আয়োজিত শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর সময় ৪৮ লাখ পাউন্ড মূল্যের সোনার কমোড চুরির ঘটনায় একটি চক্রের সদস্যদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এই চুরির ঘটনা ঘটে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, যখন অক্সফোর্ডশায়ারে অবস্থিত রাজপ্রাসাদে একটি জাঁকজমকপূর্ণ শিল্পকর্ম প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। প্রদর্শনীটি উদ্বোধন হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে, চোরেরা সোনা দিয়ে তৈরি কমোডটি চুরি করে নিয়ে যায়।

চুরির এই ঘটনায় মাইকেল জোন্স এবং ফ্রেড ডো নামের দুইজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মাইকেল জোন্স চুরির পরিকল্পনা করেছিলেন এবং ফ্রেড ডো সোনাটি বিক্রি করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। অপর একটি অভিযোগ ছিল বোরা গুচাকের বিরুদ্ধে, কিন্তু তাঁকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

চুরির চক্রের প্রধান সদস্য, জেমস শিন, এখনো পলাতক রয়েছেন। বিবিসি এখন তাঁর অপরাধের বিস্তারিত ইতিহাস জানাতে পেরেছে। ২০০৫ সাল থেকে তিনি অন্তত ছয়বার কারাগারে গেছেন এবং সংগঠিত অপরাধী চক্র পরিচালনা করছেন। এই অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও চুরির মাধ্যমে ৫০ লাখ পাউন্ডের বেশি অর্থ সংগ্রহ করার অভিযোগ রয়েছে, তবে অধিকাংশ অর্থই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

সিসিটিভি ফুটেজে চুরির সময় পাঁচজনকে দেখা যায়, তবে শুধু দুইজন—শিন ও জোন্স—ধরা পড়েছেন। আদালতের শুনানিতে বলা হয়, চুরির কয়েক দিনের মধ্যেই সোনার কমোডটি ভেঙে বিক্রি করা হয়েছিল, এবং সোনার কোনো অংশই উদ্ধার করা যায়নি।

চুরির ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত আলামত থেকে শিনের ডিএনএ পাওয়া যায়, এবং পরবর্তীতে তিনি দোষ স্বীকার করেন। তাঁর কাপড় থেকেও সোনার টুকরা পাওয়া গিয়েছিল। শিনকে “সাধারণ চরিত্র” হিসেবে উল্লেখ করে আদালত তাঁর বিরুদ্ধে চুরি ও অপরাধমূলক সম্পদ স্থানান্তরের পরিকল্পনার অভিযোগ আনে।

৪০ বছর বয়সী শিন পূর্বে জালিয়াতি, চুরি এবং আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন। সোনার কমোড চুরির পরিকল্পনা সন্দেহে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তবে তিনি জামিনে মুক্তি পান। শিন পরে একই ধরনের অপরাধ চালিয়ে যান এবং আট মাস পর সাফোকের নিউমার্কেট থেকে চার লাখ পাউন্ড মূল্যের সোনা ও রুপার ট্রফি চুরি করেন, যা এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

ব্লেনইম প্রাসাদে এই চুরির পরিকল্পনা কীভাবে করা হয়েছিল, তা আদালতের শুনানিতে উপস্থাপন করা হয়। বলা হয়, জোন্স চুরির আগের দিন দ্বিতীয়বার প্রাসাদে গিয়ে সোনালি রঙের কমোডটির ছবি তোলেন এবং কমোডের কাছে থাকা তালা ও জানালার ছবি নেন। এর পর, প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ইতালীয় শিল্পী মৌরিজিও কাতেলান, যিনি ওই সোনার কমোডটি তৈরি করেছিলেন। প্রদর্শনী শেষে, অতিথিরা চলে যাওয়ার পর চোরেরা দুটি চুরি করা গাড়ি ব্যবহার করে প্রাসাদের গেট ভেঙে প্রবেশ করে এবং একটি জানালা ভেঙে সোনার কমোডটি চুরি করে নিয়ে যায়।Attach

Search

Reason

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।