বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায় বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি এও মন্তব্য করেছেন যে, মিয়ানমারের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা হওয়া জরুরি, যাতে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘‘রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার অধিকার রয়েছে, তারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে। দ্বিতীয়ত, তারা ক্যাম্পে আরও ভালো পরিবেশ চায়। তবে দুর্ভাগ্যবশত, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ সম্প্রতি মানবিক সহায়তা কমিয়ে দিয়েছে, যার ফলে খাদ্য সহায়তায় কাটছাঁট করতে হয়েছে। আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আমি চেষ্টা করব, যতটুকু সম্ভব ফান্ড সংগ্রহ করে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগে সহায়তা চালু রাখতে।’’
গুতেরেস আরও বলেন, ‘‘ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের মানসম্মত জীবনযাপন নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ সাহায্য করবে এবং তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যও কাজ করবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেন রোহিঙ্গাদের ভুলে না যায়, এ বিষয়ে আমি আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে তীব্র আওয়াজ তুলব। সম্মানের সঙ্গে বসবাস করার জন্য এই সম্প্রদায়ের মানবিক সহায়তা অত্যন্ত প্রয়োজন।’’
এর আগে, জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গাদের কথা শুনে ক্যাম্পের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এ সময় রোহিঙ্গা শিক্ষার্থী ও কমিউনিটি নেতারা রাখাইনের গণহত্যার বিচার ও তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে আকুতি জানান। তারা খাবারের বিল কমানোর পাশাপাশি টেকসই প্রত্যাবাসন নিয়ে সহযোগিতা কামনা করেন।
এদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিব উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্রও পরিদর্শন করবেন। এসব পরিদর্শন শেষে, তিনি প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করবেন, যেখানে তার সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরে, সন্ধ্যায় তারা একসঙ্গে ঢাকায় ফিরবেন।
আজ (শুক্রবার) দুপুর ১২টা ৪৮ মিনিটে, জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ও ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছায়। বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।