সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, “আমি আপনাদের সতর্ক করছি। পরবর্তীতে যদি কেউ বলেন যে, আমি সতর্ক করিনি, তবে তা ভুল হবে। যদি আপনারা নিজেদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন, কাদা ছোড়াছুড়ি, মারামারি ও কাটাকাটি করেন, তবে এ দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে।” তিনি আরও বলেন, “আমার কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই। আমার একমাত্র লক্ষ্য হলো, দেশ ও জাতিকে একটি সুন্দর অবস্থানে রেখে সেনানিবাসে ফিরে আসা। গত সাত মাসে অনেক কিছু ঘটেছে, কিন্তু আমরা এখানে শান্তিপূর্ণভাবে থাকতে চাই।”
গতকাল রাজধানীর মহাখালী রাওয়া ক্লাবে জাতীয় শহীদ সেনা দিবসের অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সেনাপ্রধান। তিনি আরও বলেন, “দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার পেছনে কিছু কারণ রয়েছে। প্রথমত, আমরা নিজেদের মধ্যে হানাহানি করছি, একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছি, যা অপরাধীদের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করছে। তারা জানে, এ সময়ে অপরাধ করলে শাস্তি পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তাই যদি আমরা সংগঠিত হয়ে একত্রিত হই, তাহলে এই সমস্যা সম্মিলিতভাবে সমাধান করা সম্ভব হবে।”
সেনাপ্রধান বলেন, “পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, ডিজিএফআই, এনএসআই – এসব বাহিনী অতীতে দেশটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে। তাদের কারণে আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ পেয়েছি। তাদেরকে অবমূল্যায়ন করার কোনো সুযোগ নেই।” তিনি বলেন, “কেউ যদি অপরাধ করে, অবশ্যই শাস্তি হবে। তবে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, এ প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল না হয়। যদি কোনো বাহিনীকে দুর্বল করে দিতে চান, তাহলে দেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষা করা সম্ভব হবে না।”
“এ দেশে শান্তি রক্ষার দায়িত্ব শুধু সেনাবাহিনীর নয়, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার-বিডিপিসহ বিভিন্ন বাহিনীর। আমাদের ৩০ হাজার সৈন্য রয়েছে, কিন্তু একে অপরকে সহযোগিতা না করলে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে না,” বলেন সেনাপ্রধান।
তিনি আরও বলেন, “এদেশে যে উচ্ছৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা আমাদের নিজেদের সৃষ্টি। একে অপরকে শ্রদ্ধা না করলে দেশে শান্তি আসবে না। আমরা একটি ফ্রি, ফেয়ার এবং ইনক্লুসিভ নির্বাচন করতে যাচ্ছি, যার জন্য সরকার সংস্কার করবে। আমি ড. ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং তিনি এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন।”
“সেনাবাহিনীর প্রতি আক্রমণ করবেন না। আমরা একমাত্র বাহিনী যারা আপনাদের জন্য কাজ করছি। আমাদের সাহায্য করুন, অনুপ্রাণিত করুন,” বলেন সেনাপ্রধান।
পিলখানার বিডিআর হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, “এটি কোনো সেনা সদস্য করেনি। বিডিআর সদস্যদের দ্বারা এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের পর যে বিচারিক প্রক্রিয়া চলছে, তা অব্যাহত থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “যারা দোষী, তারা শাস্তি পেয়েছে এবং তাদের শাস্তি পাওয়ার উপযুক্ত ছিল। কোনো রাজনৈতিক নেতার বা বাইরের শক্তির সংশ্লিষ্টতা যদি থাকে, তা কমিশন তদন্ত করবে এবং জনগণকে জানাবে।”
“বিডিআর সদস্যদের শাস্তি নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলছেন, তাদের জন্য একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। কিছু সদস্য তাদের শাস্তির বিষয়ে আপত্তি জানাচ্ছেন, তবে তা তদন্ত করে সমাধান করা হবে। অপরাধ করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না, কারণ এটি একটি ডিসিপ্লিন ফোর্স,” বললেন সেনাপ্রধান।
Ata shudhu shotorkobarta noi ata shobaike akotrito hoie desh gothon korer upodesh o nirdesh