চীনে গত বছর বিয়ের নিবন্ধন এক-পঞ্চমাংশ কমেছে। তরুণদের বিয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়ানো এবং সন্তান জন্মদানে উৎসাহিত করার জন্য চীন সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও, বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব পদক্ষেপ কার্যত ফলপ্রসূ হচ্ছে না।
চীনের সামাজিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে দেশব্যাপী ৬১ লাখের কিছু বেশি যুগল বিয়ে নিবন্ধন করেছেন, যা ২০২৩ সালে ছিল ৭৬ লাখ ৮০ হাজার।
চীনে দীর্ঘদিন ধরে তরুণ প্রজন্মের বিয়ের প্রতি আগ্রহ কমার প্রধান কারণ হিসেবে সন্তান লালনপালনের চ্যালেঞ্জ এবং শিক্ষার জন্য অতিরিক্ত খরচকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এছাড়া, কয়েক বছর ধরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধীরগতি, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাস করা তরুণদের জন্য কাজের সুযোগ কমে যাওয়ার পাশাপাশি, যারা চাকরি পেয়েছেন, তারা দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক গড়তে অনিরাপদ বোধ করছেন।
চীনে তরুণদের বিয়ের প্রতি আগ্রহী করা এবং সন্তান জন্মদানে উৎসাহিত করা সরকারের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও চীন বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ, প্রায় ১৪০ কোটি মানুষের বাস, তবে সেখানে বৃদ্ধ জনসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।
১৯৮০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চীনে ‘এক সন্তান নীতি’ ছিল, যার কারণে একে একে জন্মহার কমে যায়। বর্তমানে, চীনে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ অবসর জীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছেন, যা প্রায় যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার সমান।
তবে চীনের কর্তৃপক্ষ গত বছর কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘লাভ এডুকেশন’ বা ভালোবাসা-সংক্রান্ত শিক্ষা চালু করেছে, যাতে তরুণদের মধ্যে বিয়ে, ভালোবাসা, পরিবার এবং সন্তানের জন্ম নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে ওঠে।
চীনের কঠোর শূন্য কোভিড নীতি জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তবে ২০২৪ সালে, করোনার প্রভাব কাটিয়ে কিছুটা হলেও জন্মহার বেড়েছে।
গত নভেম্বরে, চীনের মন্ত্রিসভা দেশটির স্থানীয় সরকারগুলোকে জনসংখ্যা সংকট মোকাবিলায় সম্পদের বিনিয়োগ এবং ‘সঠিক বয়সে’ বিয়ে ও সন্তান নেওয়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর নির্দেশ দেয়। বিয়ের খরচ কমানোসহ আরও বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ২৬ লাখের বেশি যুগল বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেছেন, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ১ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।