জলবায়ু পরিবর্তন খরার তীব্রতা ও বিস্তৃতি বাড়িয়ে দিচ্ছে

বিশ্বজুড়ে খরার ব্যাপকতা এবং তীব্রতা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বৈশ্বিক সমীক্ষা অনুযায়ী, গত চার দশকে খরার সংখ্যা এবং তীব্রতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনই খরার এই বৃদ্ধির মূল কারণ।

অস্ট্রিয়ার ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা ১৯৮০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বৈশ্বিক খরার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন এই সংকটকে আরও তীব্র করে তুলছে। প্রতি বছর গড়ে ৫০ হাজার বর্গকিলোমিটার নতুন এলাকা খরার কবলে পড়ছে, যা কৃষি, শক্তি উৎপাদন এবং পরিবেশের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।

বিজ্ঞানী ফ্রান্সেসকা পেলিসিওটির মতে, চিলির দীর্ঘমেয়াদী খরা এর একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। সেখানে গত পনেরো বছর ধরে চলা খরা এখন এক হাজার বছরের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী। এই খরা চিলির পানির রিজার্ভকে প্রায় ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে, এবং কৃষি ও খনিশিল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

অন্যদিকে, বিজ্ঞানী ডার্ক কার্গার জানান, খরা এখন এমন অঞ্চলেও দেখা দিচ্ছে, যেগুলি আগে কখনো খরার মুখোমুখি হয়নি। ২০১০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কঙ্গো রেইন ফরেস্টে খরার প্রভাব লক্ষণীয়, যা একসময় কল্পনাও করা যেত না।

গবেষণায় দেখা গেছে, খরার বিস্তৃতি আর শুধু একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের সমস্যা নয়; এটি বৈশ্বিক বাস্তুতন্ত্রে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এই বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র “সায়েন্স” জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন খরার মতো সংকটকে আরও ভয়াবহ করে তুলছে, এবং এর মোকাবিলা করার জন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

2 Replies to “জলবায়ু পরিবর্তন খরার তীব্রতা ও বিস্তৃতি বাড়িয়ে দিচ্ছে”

  1. আবহাওয়া পরিবর্তন কারণে অনেক দেশের ক্ষতি হয় বিভিন্ন রকম। তাই আবহাওয়া দের সাথে আমাদের খাব মিলিয়ে চলতে হবে। না হলে আমাদের দেশ ও পরিবেশের অনেক বেশি ক্ষতি হবে ।👍

  2. বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব [১] বলতে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে যে অস্থায়ী কিংবা স্থায়ী নেতিবাচক এবং ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে, তার যাবতীয় চুলচেরা বিশ্লেষণকে বোঝাচ্ছে। ইউএনএফসিসিসি বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে মানুষের কারণে সৃষ্ট,[২] আর জলবায়ুর বিভিন্নতাকে অন্য কারণে সৃষ্ট জলবায়ুর পরিবর্তন বোঝাতে ব্যবহার করে। কিছু কিছু সংগঠন মানুষের কারণে সৃষ্ট পরিবর্তনসমূহকে মনুষ্যসৃষ্ট জলবায়ুর পরিবর্তন বলে। তবে একথা অনস্বীকার্য যে, বিশ্বব্যাপি জলবায়ুর পরিবর্তন শুধুমাত্র প্রাকৃতিক কারণেই নয়, এর মধ্যে মানবসৃষ্ট কারণও সামিল। এই নিবন্ধে “বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন” বলতে শ্রেফ প্রাকৃতিক কারণে জলবায়ু পরিবর্তনকে বোঝানো হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।