বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের তরুণরা এখন রাষ্ট্র-রাজনীতির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে, যা অবশ্যই একটি ইতিবাচক দিক। গত দেড় দশকে এই তরুণরা ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়নি। এই গণতান্ত্রিক অধিকারবঞ্চিত তরুণদের মধ্যে কেউ যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে চান, তবে বিএনপি সেই উদ্যোগকে সমর্থন জানায়।
গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয় শিক্ষক দিবস ও শিক্ষক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। তারেক রহমান আরও বলেন, তবে রাজনৈতিক দল গঠন করতে গিয়ে যদি কেউ রাষ্ট্রীয় বা প্রশাসনিক সহায়তা নেন, তাহলে তা জনগণকে হতাশ করবে। এছাড়া, যদি অন্য রাজনৈতিক দলের প্রতি প্রতিহিংসামূলক মনোভাব বা বক্তব্য প্রকাশ করা হয়, তাও জনগণের কাছে অপ্রত্যাশিত হবে।
বিএনপির শীর্ষ নেতা বলেন, অতীতের পথ থেকে বেরিয়ে তরুণদের নতুন পথ তৈরি করা উচিত, তবে তা কোনো প্রশ্নবিদ্ধ পথে নয়। পথটি হতে হবে স্বচ্ছ ও স্বাভাবিক। বাংলাদেশের পক্ষে ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক শক্তির মধ্যে অযথা তর্কের কোনও প্রয়োজন নেই; সময়ের অপচয় ছাড়া কিছুই হবে না।’ একই সঙ্গে সরকারের প্রতি তাঁর আবেদন, জনগণ যদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতা সহ্য করে, তাহলে যারা ক্ষমতায় আছেন, তাঁদের আরও ধৈর্যশীল হতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘জনগণ বিশ্বাস করে, একটি নির্দলীয় অরাজনৈতিক সরকার সহজেই বাজার সিন্ডিকেটের কবল থেকে জনগণকে মুক্ত করতে পারবে। তাহলে কেন সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে? কেন জনগণের ওপর ভ্যাটের বোঝা চাপানো হচ্ছে? কেন এখনো বাজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য চলছেই?’ এমন পরিস্থিতিতে জনগণের মনে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, তিনি বলেন।
তারেক রহমান আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নানা সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে, তবে তাদের ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। কারণ, হাজারো শহীদের রক্তের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে, কিন্তু আমরা এখনও একই আছি। এখনও আদালতে হাজিরা দিতে হয়, মুক্তির পথ পাইনি। তাই আন্দোলন করে আমাদের নির্বাচন আদায় করতে হবে, তাতে কোনো দুঃখ হবে না।’
এছাড়া, সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান এবং নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।