বিশ্বের আকাশে দেখা যেতে পারে একটি উজ্জ্বল ধূমকেতু, যা ১ লাখ ৬০ হাজার বছরে একবার দেখা যায়। এটি যদি দেখা যায়, তা হবে একটি অত্যন্ত বিরল ঘটনা।
নাসা জানিয়েছে, কোনো ধূমকেতু কতটা উজ্জ্বল হবে, তা প্বাভাস দেওয়া কঠিন। তবে ‘সি/২০২৪ জি৩ (আটলাস)’ নামের এই ধূমকেতু খালি চোখে দেখা যেতে পারে, এবং এটি যথেষ্ট উজ্জ্বল হতে পারে।
এটি বর্তমানে পেরিহেলিয়নে অবস্থান করছে, যা একটি ধূমকেতুর সূর্যের সবচেয়ে নিকটবর্তী বিন্দু। এই অবস্থানটি ধূমকেতুর উজ্জ্বলতায় প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোমবার রাত থেকেই এটি দেখা যেতে পারে।
এখন পর্যন্ত ধূমকেতুটির কোথায় কোথায় দেখা যাবে তা নিশ্চিত নয়, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শুক্র গ্রহের মতো উজ্জ্বল হতে পারে এবং সবচেয়ে ভালোভাবে দেখা যেতে পারে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে।
নাসার ‘টেরেস্ট্রিয়াল-ইমপ্যাক্ট লাস্ট অ্যালার্ট সিস্টেম’ এর মাধ্যমে গত বছর ধূমকেতু ‘সি/২০২৪ জি৩ (আটলাস)’ শনাক্ত হয়।
কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষক শ্যাম বাাি জানিয়েছেন, ধূমকেতুটির গতিপথের হিসাব অনুসারে এটি সূর্য থেকে প্রায় ৮৩ লাখ মাইল দূর দিয়ে অতিক্রম করবে, যা একে ‘সান-স্কার্টিং’ ধূমকেতু হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে। তিনি আরও বলেন, ১ লাখ ৬০ হাজার বছরে একবারই এ ধূমকেতু দেখা যায়।
বালাজি জানান, এ ধূমকেতু দেখার সম্ভাবনা স্থানীয় পরিবেশ এবং এর আচরণের ওপর নির্ভর করবে। তিনি বলেন, অন্যান্য ধূমকেতুর তুলনায় এর উজ্জ্লত ও দৃশ্যমানতা হয়তো অনেক বেশি হতে পারে। দক্ষিণ গোলার্ধে বসবাসকারী লোকেরা সূর্যোদয়ের আগে পূর্ব দিগন্তে এবং পেরিহেলিয়নের পর সূর্যাস্তের পরে পশ্চিম দিগন্তে এটি দেখতে পাবেন।
ধূমকেতুটি উজ্জ্বল হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও, এর উজ্জ্বলতা পূর্বাভাস দেওয়া খুবই কঠিন। অনেক সময় পূর্বাভাস অনুযায়ী উজ্জ্বল হতে চাওয়া ধূমকেতুগুলি অপেক্ষাকৃত কম উজ্জ্বল হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, উত্তর গোলার্ধের কিছু জায়গা, যেমন যুক্তরাজ্য, থেকে এটি দেখা কঠিন হতে পারে। যারা এটি দেখতে চান, তাদের আলোর দূষণমুক্ত স্থান বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, এবং বাইনোকুলার বা ছোট টেলিস্কোপ ব্যবহারেরও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
ধূমকেতুটি দেখার জন্য বিশেষ সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময।
নাসার নভোচারী ডন পেটিট সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে ধূমকেতুটির একটি ছবি শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেছেন, “কক্ষপথ থেকে ধূমকেতু দেখা খুবই বিস্ময়কর। আটলাস সি২০২৪–জি৩ আমাদের এখানে সফর করছে।”