চট্টগ্রামের জাতিসংঘ পার্ক এখন ‘জুলাই স্মৃতি উদ্যান’

চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায় অবস্থিত জাতিসংঘ পার্ককে আধুনিকায়ন করে নতুন নাম দেওয়া হয়েছে ‘জুলাই স্মৃতি উদ্যান’, যা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি ধারণ করতে তৈরি করা হয়েছে।

৩ জানুয়ারি শুক্রবার দুপুরে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান উদ্যানটির উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “শহীদ ওয়াসিম আকরামের স্মরণে চট্টগ্রামে একটি উড়াল সেতু ও ‘জুলাই স্মৃতি উদ্যান’ তৈরি করা হয়েছে। আমরা তাদের স্মরণ করছি যারা গত ১৫ বছর ধরে অন্যায় ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। আমাদের উদ্দেশ্য হলো, আগামী প্রজন্ম যেন এই শহীদদের ত্যাগের কথা স্মরণ রাখতে পারে এবং ফ্যাসিবাদ যেন কখনও ফিরে না আসে।”

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন, জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম এবং প্রকল্প বাস্তবায়নকারী গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

১৯৫৪ সালে গণপূর্ত অধিদপ্তর পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকা তৈরি করার জন্য জমি বরাদ্দ দেয়। ২.১৭ একর আয়তনের উদ্যানটির প্রথম নাম ছিল ‘পাঁচলাইশ পার্ক’। ১৯৮৮ সালে এই পার্কের দায়িত্ব চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ২০০২ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে চট্টগ্রামের তৎকালীন মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী এই পার্কের নামকরণ করেন ‘জাতিসংঘ পার্ক’।

২০১২ সালে পরবর্তী মেয়র মনজুর আলমের মেয়াদে পার্কে সুইমিং পুল এবং জিমনেশিয়াম নির্মাণের কাজ শুরু হয়, তবে পার্কে জনসাধারণের প্রবেশ বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৫ সালে সুইমিং পুলের নির্মাণ শেষ হলেও তা বেশি ব্যবহার হয়নি। ২০১৬ সালে, সিটি করপোরেশন পার্কটি বেসরকারি কোম্পানির কাছে ইজারা দিতে চাইলেও এটি আদালত পর্যন্ত গড়ায়, ফলে পার্কটি বেশ কয়েক বছর অব্যবহৃত ছিল এবং পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে।

অবশেষে, ২০২২ সালে গণপূর্ত অধিদপ্তর ১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে পার্কটির আধুনিকায়ন প্রকল্প ‘জাতিসংঘ সবুজ উদ্যান’ গ্রহণ করে।

এ প্রকল্পের আওতায় নতুন ফোয়ারা, হাঁটার পথ, বসার বেঞ্চ, শিশুদের খেলার সরঞ্জাম, ব্যয়ামের উপকরণ, সিসিটিভি ক্যামেরা, সোলার পাওয়ার সিস্টেমসহ নানা আধুনিক সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে। পার্কে নতুন গাছ ও ঘাস লাগানো হয়েছে, যা একসময় পরিত্যক্ত হয়ে পড়া পার্কটিকে আবার প্রাণবন্ত করে তুলেছে।

অবশেষে, দীর্ঘ দশক পরে চট্টগ্রামের এই উদ্যানটি আবারও সবার জন্য উন্মুক্ত হলো।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।