অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ (৮৫) আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, বেলা তিনটার পর রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। ল্যাবএইড হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসার পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভূমি মন্ত্রণালয়ে হাসান আরিফের একান্ত সচিব মো. নাছির উদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, দুপুর ৩টা ১০ মিনিটে হাসান আরিফ মৃত্যুবরণ করেন।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, আজ বাদ এশা রাজধানীর ধানমন্ডির সাত নম্বর বায়তুল আমান মসজিদে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া, আগামীকাল সকাল ১১টায় হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে আরও একটি জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
৮ আগস্ট গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন হাসান আরিফ। তিনি প্রথমে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও তাঁকে দেওয়া হয়।
হাসান আরিফ ছিলেন একজন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী। ১৯৭০ সাল থেকে তিনি আইন পেশায় যুক্ত ছিলেন। ২০০১ থেকে ২০০৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০০৮ থেকে ২০০৯ জানুয়ারি পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন।
১৯৬৭ সালে ভারতীয় পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা হাইকোর্ট থেকে আইন পেশায় যাত্রা শুরু করেন হাসান আরিফ। পরবর্তীতে ১৯৭০ সালে ঢাকায় চলে এসে হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং গ্রামীণফোন বাংলাদেশ। তিনি বর্তমানে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির কমপ্লেক্সের উপদেষ্টা ছিলেন।
এএফ হাসান আরিফের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। এক শোক বার্তায় তিনি তাঁর মৃত্যুতে আইনের জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারানোর কথা উল্লেখ করে শোক-সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।