তেঁতুলিয়ায় ৮ ডিগ্রি, শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে সীমান্তজনপদ

উত্তরের হিমালয়কন্যা পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। পৌষের শেষ দিনে শীতের প্রকোপ যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষজন তীব্র শীতের কারণে কষ্ট পাচ্ছেন।

পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ জানান, শুক্রবার সকাল ৯টায় ৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এর আগে ভোর ৬টায় রেকর্ড হয়েছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এটি।

স্থানীয়রা জানান, প্রচন্ড ঠান্ডা পড়েছে এবং হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত। কয়েকদিন ধরে ঘন কুয়াশার পর, শুক্রবার ভোরে সূর্য উঠলেও শীতের প্রকোপ অতিরিক্ত ছিল। সন্ধ্যার পর থেকে উত্তরের দিক থেকে বয়ে আসা হিমেল হাওয়া শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দেয়। রাত থেকে ভোর পর্যন্ত পুরো অঞ্চল কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে, যা শীতের অনুভূতিকে আরও শক্তিশালী করে।

এদিকে, তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। শীতের কারণে অনেকের আয়-রোজগার কমে গেছে, ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে। জীবিকার জন্য অনেকেই সকালেই নদীর বরফগলা পানিতে নেমে পাথর তুলতে যান। চা বাগানে কাজ করতে যাচ্ছেন চা শ্রমিকরা, এবং পাথরের সাইটে নারী-পুরুষ শ্রমিকদের কাজ করতে দেখা যায়। তারা জানাচ্ছেন, শীতের তীব্রতা সত্ত্বেও পরিবারের কথা চিন্তা করে কাজ করতে বেরিয়েছেন।

শীতের কারণে ছোটখাটো যানবাহন চালকরা, বিশেষ করে ভ্যান চালকরা, সমস্যায় পড়েছেন। ভ্যান চালক সায়েদ আলী ও মহির উদ্দিন জানান, ঠান্ডার কারণে অনেকেই ভ্যানে চড়তে চান না, ফলে তাদের আয় কমে গেছে। বিশেষত, সন্ধ্যা বা সকাল বেলায় যাত্রী কম পাওয়ায় তাদের আয় আরও কমেছে।

শীতের প্রকোপ বাড়ানোর পাশাপাশি, জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে ভিড় করছেন, বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। যারা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, তারা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। চিকিৎসকরা রোগীদের সেবা দেওয়ার পাশাপাশি শীতে সুরক্ষা রাখার প্রয়োজনীয় পরামর্শও প্রদান করছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।