পাঠ্যবইয়ে এবার যুক্ত হয়েছে ১৯৭১ সালের জুলাই বিপ্লবের ঘটনা। গ্রাফিতির মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের দৃশ্য এবং একাত্তরের মহান স্বাধীনতার পেছনের নায়কদের অবদান তুলে ধরা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর পরিসরে পাঠ্যবইয়ের পরিমার্জন করা হবে বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
এই বছর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে প্রায় ৪০ কোটি ১৬ লাখ নতুন বই ছাপানো হচ্ছে, যার আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। প্রতিটি বইতে রয়েছে জুলাই বিপ্লবের চিত্র এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে সংঘটিত এই আন্দোলনের প্রভাব।
তৃতীয় শ্রেণির বাংলা বইয়ের প্রচ্ছদে ‘যত বিপদ তত ঐক্য’ শিরোনামের গ্রাফিতি যুক্ত করা হয়েছে, আর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়ে ১৯৫২ থেকে ২০২৪ সালের ইতিহাস সংশ্লিষ্ট গ্রাফিতিও রাখা হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের ঘটনাবলী এবং বীরত্বগাথা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বইয়ে গল্পের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এনসিটিবি বলছে, পাঠ্যবইয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং দেশ গঠনে অবদান রাখা ব্যক্তিদের সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যাতে ইতিহাস বিকৃতি থেকে বইগুলো মুক্ত থাকে। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, তাজউদ্দীন আহমদ এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান এবং স্বাধীনতার ঘোষণাও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে আগামী শিক্ষাবর্ষের বইয়ে।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান ড. এ কে এম রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “যে গ্রাফিতিগুলো সার্বজনীন আবেদন সৃষ্টি করে এবং স্বপ্নের কথা বলে, সেগুলো আমরা বইয়ে রেখেছি। ইংরেজি বইয়ে যেমন গ্রাফিতি নামে একটি আর্টিকেল রয়েছে, তেমনি ‘আমরা তোমাদের ভুলবো না’ – এমন একটি লেখা পঞ্চম শ্রেণির বইয়ে রাখা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, স্বাধীনতার ঊষালগ্নে মেজর জিয়াউর রহমানের মৃত্যু ও ভয় উপেক্ষা করে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া এবং ৭ মার্চের ভাষণ, যা জাতিকে প্রস্তুত করেছিল, সেটাও বইয়ে স্থান পেয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, “আমাদের শিক্ষাক্রম জাতীয় দর্শনের ভিত্তিতে হবে এবং পাঠ্যপুস্তকও তেমনভাবে সাজানো হবে। বইগুলো গুণগত মানসম্পন্ন কাগজে ছাপানো হবে, যাতে একে দীর্ঘকাল ব্যবহার করা যায় এবং ব্যয় কমানো সম্ভব হয়।”