নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশের বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। ইসি মনে করে, এসব সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা কমে যাবে।
আজ, সোমবার, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে। ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
ইসি সচিব জানান, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রায় ৯-১০টি সুপারিশের ব্যাপারে তারা ভিন্নমত জানিয়ে ঐকমত্য কমিশনকে চিঠি দিয়েছে। সংস্কার কমিশন সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের জন্য একটি স্বতন্ত্র কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে, তবে নির্বাচন কমিশন মনে করে এর প্রয়োজন নেই।
এছাড়া, সংস্কার কমিশনের সুপারিশে আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের যে ফর্মুলা প্রস্তাবিত হয়েছে, তাতে শহর অঞ্চলে আসন সংখ্যা বেড়ে যাবে। ইসি মনে করে, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণে ভোটারসংখ্যা, জনসংখ্যা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা বিবেচনা করা উচিত।
ইসি সচিব আরও জানান, সংস্কার কমিশন নির্বাচন ফলাফলের সার্টিফিকেশন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন করার প্রস্তাব দিয়েছে, কিন্তু নির্বাচন কমিশন মনে করে এটির কোনো প্রয়োজন নেই, কারণ ফলাফল ঘোষণার পরে গেজেট প্রকাশিত হয় এবং সেটিই সার্টিফিকেশন হিসেবে গৃহীত হয়।
নির্বাচন কমিশনের দায়বদ্ধতা ও নির্বাচন কমিশনারদের শাস্তির বিষয়ে সংস্কার কমিশন যে সুপারিশ করেছে, সে ব্যাপারেও ইসি ভিন্নমত পোষণ করেছে। ইসি সচিব বলেন, “এ জন্য একটি ব্যবস্থা এখনো রয়েছে, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল রয়েছে।”
এছাড়া, ইসি সচিব প্রশ্ন তুলে বলেন, “যদি নির্বাচন শেষ হওয়ার পাঁচ বা দশ বছর পর নির্বাচন কমিশনারদের আদালতে যেতে হয়, তাহলে তা কি যৌক্তিক হবে?” তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনে এক জন জয়ী হবেন, বাকিরা সংক্ষুব্ধ হয়ে যেকোনো অভিযোগ করতে পারেন।” নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয়পত্র সেবার দায়িত্বও নিজস্ব হাতে রাখতে চায়।