ইউরোপের বলকান অঞ্চলের দেশ নর্থ মেসিডোনিয়ার একটি নৈশক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ৫৯ জন নিহত এবং ১৫৫ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। শনিবার রাত আড়াইটার দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে, যা স্থানীয় সময় অনুযায়ী রাত ২:৩০ মিনিটের দিকে ঘটে। রাজধানী স্কোপজে থেকে প্রায় একশ কিলোমিটার পূর্বে কোচানি শহরের একটি ক্লাবেই এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের স্মরণে দেশটির সরকার ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, ওই রাতে ক্লাবটি জনপ্রিয় হিপ হপ ব্যান্ড ডিএনকের কনসার্টের জন্য প্রায় ১৫০০ দর্শক দ্বারা পরিপূর্ণ ছিল। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আগুনের সূত্রপাত হতে পারে একটি পাইরোকাইনেটিক ডিভাইস থেকে, যা কনসার্ট বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে দর্শকদের জন্য আলোকসজ্জা বা সজ্জিত অভিজ্ঞতা সৃষ্টি করতে ব্যবহৃত হয়। এই ধরনের ডিভাইস থেকে আগুনের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা দ্রুত আগুনের বিস্তার ঘটায়।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী হৃসতিজান মিকোস্কি এই ঘটনাকে অত্যন্ত দুঃখজনক ও দেশের জন্য কঠিন এক দিন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “অনেক তরুণ প্রাণ হারিয়েছেন, যা আমাদের সবাইকে গভীর শোকের মধ্যে ফেলেছে।”
স্বাস্থ্য মন্ত্রী প্যান্স তোসকোভস্কি জানান, এই ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ক্লাবের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনা তদন্ত চলছে।
ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, যখন ব্যান্ডটি মঞ্চে গান পরিবেশন করছিল, তখন স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে এবং তা দ্রুত আগুনে পরিণত হয়। কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, ঘটনাটি ঘটার পর ক্লাবের দর্শকরা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু সত্ত্বেও তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেননি।
কোচানি হাসপাতালের পরিচালক জানিয়েছেন, পরিচয়পত্রের অভাবে আহতদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে, তবে নিহতদের বয়স ১৪ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০ বছর বয়সী মারজিয়া তাসেভা নামের একজন তরুণী জানিয়েছেন, আগুনের খবর শুনে যখন লোকজন তাড়াহুড়ো করে বের হওয়ার চেষ্টা করছিল, তখন তিনি পদদলিত হয়ে মাটিতে পড়ে যান। তবে তিনি পরে ঘটনাস্থল থেকে বের হয়ে আসতে সক্ষম হন।
অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে মারজিয়ার ২৫ বছর বয়সী বোন নিখোঁজ রয়েছেন। তাকে খোঁজার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে জানালেও, কোনো ফল পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে চিকিৎসার জন্য রাজধানী স্কোপজের হাসপাতালে পাঠানো হতে পারে।