‘চিৎকার কর মেয়ে’: গান থেকে স্লোগানে রূপান্তর

গত কয়েক বছর ধরে নারী নিপীড়নবিরোধী মিছিলে এক স্লোগান মানুষের মুখে মুখে ফিরছে: ‘চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়/আমাদের শুধু মোমবাতি হাতে নীরব থাকার দায়’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই স্লোগান শোনা যাচ্ছে। চলমান নিপীড়ন ও ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভ-প্রতিবাদেও স্লোগানটি প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।

তরুণ সংগীতশিল্পী ইলা লালালালা গত কয়েক বছরে বিভিন্ন নিপীড়নবিরোধী মিছিলে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘‘অনেক তরুণ এই স্লোগানটির সঙ্গে সহজেই নিজেদের যুক্ত করতে পারেন। স্লোগানটি আমরা প্ল্যাকার্ডেও লেখি।’’

গত বছর, শিল্পী দেবাশিস চক্রবর্তী আঁকা একটি পোস্টার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এটি ‘চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়’ স্লোগানটি নিয়ে ছিল।

এই স্লোগানটি আসলে কলকাতার গীতিকার, সুরকার এবং সংগীতশিল্পী আকাশ চক্রবর্তীর একটি গানের অংশ। ‘চিৎকার কর মেয়ে’ শিরোনামে গানটি ২০১২ সালে লেখা হয়েছিল। আকাশ চক্রবর্তী জানালেন, গানটি লিখতে তাকে উদ্বুদ্ধ করেছে পার্কস্ট্রিট ধর্ষণ ঘটনায় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অযৌক্তিক মন্তব্য এবং শাসক দলের একজন নেতার ধর্ষকদের শাস্তি থেকে রেহাই দেওয়ার চেষ্টা। আকাশ গানটি ২০১২ সালের ডিসেম্বরে দিল্লির নির্ভয়া ধর্ষণের প্রতিবাদে গাইতে শুরু করেন এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এটি পরিবেশন করা হয়।

২০১৩ সালের শুরুতে গানটি প্রথমবারের মতো ডোনা গুপ্তের কণ্ঠে রেকর্ড করা হয়। পরে এটি ভারতের ‘প্রতিবাদের গান’ অ্যালবামে অন্তর্ভুক্ত হয় এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ২০২৩ সালের এপ্রিলে কলকাতার ‘হাওয়া বদলের গান’ প্ল্যাটফর্মে প্রথমবারের মতো আকাশ চক্রবর্তীর কণ্ঠে রেকর্ড করা হয়।

আকাশ চক্রবর্তীর চট্টগ্রাম এবং বরিশাল থেকে পূর্বপুরুষদের আগমন হলেও তিনি কখনও বাংলাদেশে যাননি। তবে তার গান বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে প্রতিবাদের শক্তি জাগিয়েছে, এটি তার জন্য বড় অর্জন। তিনি জানালেন, ‘‘আমি কখনও বাংলাদেশে যাইনি, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ আমার গানের মাধ্যমে প্রতিবাদের শক্তি পাচ্ছে, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’’

ঢাকায় গানের জনপ্রিয়তা কেন? সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান বলেন, ‘‘গানের কথা সহজ এবং সুর সুন্দর। গাওয়া সহজ, আর সব মিলিয়ে ঢাকার শ্রোতারা সহজেই গানটির সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করতে পারে।’’ সায়ান আরও বলেন, ‘‘এই গানের মধ্যে দক্ষিণ এশীয় মেয়েদের যন্ত্রণা এবং সংগ্রাম প্রতিফলিত হয়েছে। এটি সময়োত্তীর্ণ একটি গান, এবং বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্য এক ধরনের প্রতিবাদের শক্তি হিসেবে কাজ করছে।’’

আকাশ চক্রবর্তী জানালেন, ‘‘গানটি কলকাতার গণ্ডি পেরিয়ে ঢাকায় এসে জনপ্রিয়তা পেয়েছে, এবং এখানে নিপীড়নবিরোধী সাংস্কৃতিক আয়োজনেও গানটি শোনা যাচ্ছে।’’

‘চিৎকার কর মেয়ে’ গানের লিরিক্স:

চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়,
আমাদের শুধু মোমবাতি হাতে নীরব থাকার দায়।
চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়,
আমাদের শুধু ধ্বজা ভাঙা রথে এগিয়ে চলার দায়।

জন্মের আগে মৃত্যু দিয়েছি, জন্মের পরে ভয়;
সকালে-বিকালে শরীর আগলে লুকিয়ে বাঁচতে হয়;
যদি ভুলচুক হয় কোনোভাবে অসাবধানের বশে,
দুই বছরেই ধর্ষিতা তুই, তোরই কিন্তু দোষে।

চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়,
আমাদের শুধু মোমবাতি হাতে নীরব থাকার দায়।
চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়,
আমাদের শুধু ধ্বজা ভাঙা রথে এগিয়ে চলার দায়।

আরও খানিকটা বড় হলে ওরা ন্যাংটো করবে তোকে;
হোর্ডিংজুড়ে তোর খোলা পিঠ সাপটে গিলবে লোকে;
বিক্কিরি হবে আরও আছে তোর যা কিছু ব্যক্তিগত;
আমরা শুধুই খানিক লোলুপ, খানিকটা বিব্রত।

চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়,
আমাদের শুধু মোমবাতি হাতে নীরব থাকার দায়।
চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়,
আমাদের শুধু ধ্বজা ভাঙা রথে এগিয়ে চলার দায়।

সম্ভব হলে সূর্যের আলো মাখিসনা চোখেমুখে;
না হলেও খুব চুপিচুপি মাখ, পাছে দেখে ফেলে লোকে;
এরপরও খোলা রাস্তায় ওরা খেয়ে ফেলে গেলে তোকে,
প্রশাসন শুধু হাততালি দিয়ে বেশ্যা বলবে তোকেই।

চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়,
আমাদের শুধু মোমবাতি হাতে নীরব থাকার দায়।
চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়,
আমাদের শুধু ধ্বজা ভাঙা রথে এগিয়ে চলার দায়।

গত কয়েক বছর ধরে নারী নিপীড়নবিরোধী মিছিলে এক স্লোগান মানুষের মুখে মুখে ফিরছে: ‘চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়/আমাদের শুধু মোমবাতি হাতে নীরব থাকার দায়’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই স্লোগান শোনা যাচ্ছে। চলমান নিপীড়ন ও ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভ-প্রতিবাদেও স্লোগানটি প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।

তরুণ সংগীতশিল্পী ইলা লালালালা গত কয়েক বছরে বিভিন্ন নিপীড়নবিরোধী মিছিলে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘‘অনেক তরুণ এই স্লোগানটির সঙ্গে সহজেই নিজেদের যুক্ত করতে পারেন। স্লোগানটি আমরা প্ল্যাকার্ডেও লেখি।’’

গত বছর, শিল্পী দেবাশিস চক্রবর্তী আঁকা একটি পোস্টার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এটি ‘চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়’ স্লোগানটি নিয়ে ছিল।

এই স্লোগানটি আসলে কলকাতার গীতিকার, সুরকার এবং সংগীতশিল্পী আকাশ চক্রবর্তীর একটি গানের অংশ। ‘চিৎকার কর মেয়ে’ শিরোনামে গানটি ২০১২ সালে লেখা হয়েছিল। আকাশ চক্রবর্তী জানালেন, গানটি লিখতে তাকে উদ্বুদ্ধ করেছে পার্কস্ট্রিট ধর্ষণ ঘটনায় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অযৌক্তিক মন্তব্য এবং শাসক দলের একজন নেতার ধর্ষকদের শাস্তি থেকে রেহাই দেওয়ার চেষ্টা। আকাশ গানটি ২০১২ সালের ডিসেম্বরে দিল্লির নির্ভয়া ধর্ষণের প্রতিবাদে গাইতে শুরু করেন এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এটি পরিবেশন করা হয়।

২০১৩ সালের শুরুতে গানটি প্রথমবারের মতো ডোনা গুপ্তের কণ্ঠে রেকর্ড করা হয়। পরে এটি ভারতের ‘প্রতিবাদের গান’ অ্যালবামে অন্তর্ভুক্ত হয় এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ২০২৩ সালের এপ্রিলে কলকাতার ‘হাওয়া বদলের গান’ প্ল্যাটফর্মে প্রথমবারের মতো আকাশ চক্রবর্তীর কণ্ঠে রেকর্ড করা হয়।

আকাশ চক্রবর্তীর চট্টগ্রাম এবং বরিশাল থেকে পূর্বপুরুষদের আগমন হলেও তিনি কখনও বাংলাদেশে যাননি। তবে তার গান বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে প্রতিবাদের শক্তি জাগিয়েছে, এটি তার জন্য বড় অর্জন। তিনি জানালেন, ‘‘আমি কখনও বাংলাদেশে যাইনি, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ আমার গানের মাধ্যমে প্রতিবাদের শক্তি পাচ্ছে, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’’

ঢাকায় গানের জনপ্রিয়তা কেন? সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান বলেন, ‘‘গানের কথা সহজ এবং সুর সুন্দর। গাওয়া সহজ, আর সব মিলিয়ে ঢাকার শ্রোতারা সহজেই গানটির সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করতে পারে।’’ সায়ান আরও বলেন, ‘‘এই গানের মধ্যে দক্ষিণ এশীয় মেয়েদের যন্ত্রণা এবং সংগ্রাম প্রতিফলিত হয়েছে। এটি সময়োত্তীর্ণ একটি গান, এবং বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্য এক ধরনের প্রতিবাদের শক্তি হিসেবে কাজ করছে।’’

আকাশ চক্রবর্তী জানালেন, ‘‘গানটি কলকাতার গণ্ডি পেরিয়ে ঢাকায় এসে জনপ্রিয়তা পেয়েছে, এবং এখানে নিপীড়নবিরোধী সাংস্কৃতিক আয়োজনেও গানটি শোনা যাচ্ছে।’’

‘চিৎকার কর মেয়ে’ গানের লিরিক্স:

চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়,
আমাদের শুধু মোমবাতি হাতে নীরব থাকার দায়।
চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়,
আমাদের শুধু ধ্বজা ভাঙা রথে এগিয়ে চলার দায়।

জন্মের আগে মৃত্যু দিয়েছি, জন্মের পরে ভয়;
সকালে-বিকালে শরীর আগলে লুকিয়ে বাঁচতে হয়;
যদি ভুলচুক হয় কোনোভাবে অসাবধানের বশে,
দুই বছরেই ধর্ষিতা তুই, তোরই কিন্তু দোষে।

চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়,
আমাদের শুধু মোমবাতি হাতে নীরব থাকার দায়।
চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়,
আমাদের শুধু ধ্বজা ভাঙা রথে এগিয়ে চলার দায়।

আরও খানিকটা বড় হলে ওরা ন্যাংটো করবে তোকে;
হোর্ডিংজুড়ে তোর খোলা পিঠ সাপটে গিলবে লোকে;
বিক্কিরি হবে আরও আছে তোর যা কিছু ব্যক্তিগত;
আমরা শুধুই খানিক লোলুপ, খানিকটা বিব্রত।

চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়,
আমাদের শুধু মোমবাতি হাতে নীরব থাকার দায়।
চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়,
আমাদের শুধু ধ্বজা ভাঙা রথে এগিয়ে চলার দায়।

সম্ভব হলে সূর্যের আলো মাখিসনা চোখেমুখে;
না হলেও খুব চুপিচুপি মাখ, পাছে দেখে ফেলে লোকে;
এরপরও খোলা রাস্তায় ওরা খেয়ে ফেলে গেলে তোকে,
প্রশাসন শুধু হাততালি দিয়ে বেশ্যা বলবে তোকেই।

চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়,
আমাদের শুধু মোমবাতি হাতে নীরব থাকার দায়।
চিৎকার কর মেয়ে, দেখি কত দূর গলা যায়,
আমাদের শুধু ধ্বজা ভাঙা রথে এগিয়ে চলার দায়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।