ইসলামী চিন্তাবিদদের পরামর্শ অনুসারে, শিশুকে রোজা রাখতে অভ্যস্ত করার প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা উচিত, যাতে তারা কোনো ধরনের চাপ অনুভব না করে। রোজাদার শিশুকে ইফতার, রাতের খাবার এবং সেহেরিতে এমন খাবার প্রদান করতে হবে যা তাদের শরীরে পানি শূন্যতা (ডিহাইড্রেশন) হতে না দেয়। পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন, পানীয়, ফলমূল ও সবজি খাওয়ানো উচিত, যাতে শিশুর ক্যালোরির কোনো ঘাটতি না হয়।
পুষ্টিবিদরা বলেন, “অনেক মা-বাবা চিন্তা করেন, ‘আমার শিশু সারাদিন কিছু খাবে না, তার পুষ্টির চাহিদা কীভাবে পূর্ণ হবে?’ তবে যদি আমরা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি, তাহলে বলা হয়েছে, ‘সাবালক হলে রোজা ফরজ’। সাবালক হওয়ার আগেই শিশুকে ধীরে ধীরে রোজায় অভ্যস্ত করা যেতে পারে।”
শিশুকে ইফতার থেকে সেহেরি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ও পানীয় জাতীয় খাবার দিতে হবে। শিশুরা যে পানীয়গুলো পছন্দ করে, যেমন তরমুজের রস, বাঙ্গির রস বা মালটার জুস, সেগুলো তাদের ইমিউনিটি সিস্টেম শক্তিশালী করবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে। এছাড়া, একটি স্যান্ডউইচও তার জন্য ভালো বিকল্প হতে পারে।
শিশুকে রোজা রাখতে সহায়ক কয়েকটি পদ্ধতি:
১. ধীরে ধীরে সময় বাড়ানো: প্রথমে শিশুকে দিন বা সময়ের কিছু অংশে রোজা রাখার সুযোগ দিন, তারপর ধীরে ধীরে সময় বাড়ান। এভাবেই আমি ও আমার ভাই-বোনরা রোজা রাখার অভ্যাস করেছি।
২. রোজার ফজিলত সম্পর্কে গল্প শোনা: শিশুকে রোজার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কিত হাদিস গল্প আকারে শোনান, যেমন রোজাদারের জান্নাতে প্রবেশের বিশেষ দরজা “রাইয়ান” সম্পর্কে আলোচনা করা।
৩. পুরস্কার প্রদান: শিশুরা যখন রোজা রাখে, তাদের প্রতি কিছু পুরস্কারের ব্যবস্থা করুন। এতে তাদের উৎসাহ বাড়বে এবং রোজা রাখার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে।
৪. আত্মীয়দের মধ্যে রোজাদার শিশুদের গল্প শোনানো: পরিবারের বা আত্মীয়স্বজনের মধ্যে যেসব শিশুরা রোজা রাখে, তাদের গল্প শোনান এবং সুযোগ পেলে তাদের সাথে দেখা করতে দিন। এতে তাদের মধ্যে সিয়াম পালন অব্যাহত থাকবে।
অনেক অভিভাবক শিশুদের শরীর নষ্ট হবে বলে রোজা রাখতে দেন না, যা আসলে ভুল ধারণা। মাঝে মাঝে উপবাস শরীরের জন্য উপকারী, আর এ ব্যাপারে চিকিৎসা বিজ্ঞানও অনেক গবেষণা করেছে যা প্রমাণ করে উপবাসের অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।
আমাদের ইসলাম ধর্মের সাত বছর শিশুদের রোজা রাখা ওয়াজিব। দেখা যায় প্রায় ছোট শিশুরা রোজা রাখে তাদের জন্য এগুলো যত্ন সহকারে মানতে হবে। যেন তাদের রোজা রাখার সময় কষ্ট না হয়।