ট্রাম্পের ভাষণে কংগ্রেসে তীব্র উত্তেজনা, জেলেনস্কির প্রশংসা

মার্কিন কংগ্রেসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভাষণের সময় ব্যাপক হট্টগোল দেখা দেয়। কংগ্রেসের সদস্যরা প্রতিবাদ ও পাল্টা প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠেন, ফলে ডেমোক্রেটদের কিছু সদস্যকে হাউস থেকে বের করে দেওয়া হয়। বর্ষীয়ান সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সও ওয়াকআউট করেন।

ডেমোক্রেটরা ট্রাম্পের ভাষণ প্রতিবাদে স্লোগান লেখা টি-শার্ট পরেন। এই পরিস্থিতিতে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের শান্তিচুক্তিতে প্রস্তুতির কথা জানালে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ট্রাম্পকে চিঠি পাঠিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুতির সিগন্যাল দেন। ট্রাম্প তার চিঠি প্রশংসা করেন এবং জানান, ইউক্রেনের সাথে বিরল খনিজ অনুসন্ধানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর সুবিধা দেয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।

ট্রাম্প কংগ্রেসে দেওয়া দীর্ঘ ভাষণে বলেন, ইউরোপিয়ান দেশগুলো ইউক্রেনকে সহায়তার চেয়ে রাশিয়ার তেলের পেছনে বেশি অর্থ ব্যয় করছে। তিনি ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন ডজ-এর ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং বর্তমান মার্কিন সমস্যা সমাধানে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে দায়ী করেন। ২০ জানুয়ারি শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্প তার প্রথম ৪৩ দিনের কার্যক্রম তুলে ধরেন এবং মহিলাদের স্পোর্টস থেকে ট্রান্সজেন্ডারদের নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনার কথা জানান।

ট্রাম্প কংগ্রেসে আরও বলেন, পানামা ক্যানেল দখলের পরিকল্পনা নতুন করে সামনে আনলেও, গ্রিনল্যান্ড কেনার পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, গ্রিনল্যান্ডের ভাগ্য সেখানে বসবাসকারী জনগণের হাতে থাকলে ভালো।

ট্রাম্প ইউক্রেনের সাথে সম্ভাব্য চুক্তির কথা তুলে ধরেন এবং প্রশ্ন তোলেন, “ডেমোক্রেটরা কি চান যে এই যুদ্ধ আরও পাঁচ বছর চলুক?” তিনি যুদ্ধ বন্ধ করতে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালানোর কথা জানান এবং রাশিয়ার কাছ থেকে শক্তিশালী শান্তির সিগন্যাল পেয়েছেন বলে দাবি করেন।

কংগ্রেসে তার ভাষণের সময়, ডেমোক্রেটরা বারবার প্রতিবাদ করে এবং ট্রাম্পের বক্তব্যে বাধা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে ডেমোক্রেট প্রতিনিধি আল গ্রিনকে হাউস চেম্বার থেকে বের করে দেওয়া হয়। তবে, ট্রাম্প তার বক্তব্য চালিয়ে যান এবং বলেন, “আমেরিকা ব্যাক।”

এ সময় ট্রাম্পের প্রতিবাদে ডেমোক্রেটরা কালো টি-শার্ট পরেন, যার ওপর “রেজিস্ট” লেখা ছিল। কিছু সিনেটরও ওয়াকআউট করেন, এবং ট্রাম্পের ভাষণে প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন ধরনের সাইন প্রদর্শন করেন। ট্রাম্প তার ভাষণে উল্লেখ করেন, “এটা আমার পঞ্চম ভাষণ, আর আমি জানি ডেমোক্রেটদের প্রশংসা করার কিছু নেই।”

শেষে, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সমাধানমূলক পদ্ধতিকে সামনে রেখে কংগ্রেসে তার বক্তব্য শেষ করেন, এবং ভবিষ্যতে অপরাধ কমানো ও জাতীয় সমস্যা সমাধানের ওপর জোর দেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।