বর্তমান সময়ে শিশু-কিশোরদের মেধা প্রতিযোগিতার মুখে ভবিষ্যত তৈরি করতে হয়। এ কারণে, যেসব শিশুরা পড়াশোনায় পিছিয়ে থাকে, তাদের সংকট সময়মতো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগিতা করা জরুরি। নয়তো, ভবিষ্যতে তারা স্কুল পারফরম্যান্স, উচ্চ শিক্ষা, সামাজিক সম্পর্ক, চাকরি, এবং বৈবাহিক জীবনে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে।
পড়াশোনায় সমস্যা তৈরির প্রধান কারণসমূহ:
অনিদ্রা: শৃঙ্খলাবিহীন টেলিভিশন প্রোগ্রাম দেখা, অতিরিক্ত হৈ-চৈ বা ঘিঞ্জি পরিবেশও শিশুর অমনোযোগিতার অন্যতম কারণ।
খাবারে সমস্যা: শিশুর পুষ্টির অভাব তার পড়াশোনায় প্রভাব ফেলতে পারে। কম ক্যালোরি, কম প্রোটিন বা অন্যান্য পুষ্টির ঘাটতি হলে শিশুদের মনোযোগ কমে যায়। বিশেষভাবে, যেসব শিশুরা ঠিকমতো ওজন বাড়াতে পারে না, কিংবা আয়রন বা ভিটামিনের অভাবে রক্তাল্পতায় ভোগে, তাদের অমনোযোগিতার ঝুঁকি বেশি থাকে।
বেশি পড়াশোনার চাপ: পড়াশোনার অত্যধিক চাপ শিশুকে ক্লান্ত করে তোলে, যার ফলে তাদের পারফরম্যান্সও ভালো হয় না। তাই, পড়াশোনার পরিমাণ সঠিকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ হওয়া জরুরি।
ঘরে অশান্তি: পরিবারের মধ্যে প্রতিনিয়ত ঝগড়া বা অশান্তি শিশুর মানসিকভাবে ক্ষতি করতে পারে। এতে শিশুর মনোযোগ স্কুলে গিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে যায়, দুশ্চিন্তা এবং হতাশায় নিমজ্জিত থাকে। কিছু ক্ষেত্রে, বাড়ির অত্যাচারের প্রতিশোধ নিতে শিশুরা স্কুলে এসে অশান্তি সৃষ্টি করে।
স্কুল ফোবিয়া: অনেক শিশু স্কুলে যেতে ভয় পায়। এর পেছনে থাকতে পারে নানা কারণে—ঘর থেকে অনেক সময় দূরে থাকতে ভয়, অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে সম্পর্কের সমস্যা, বা স্কুল টয়লেটের জন্য চিন্তা। এসব কারণে শিশু অনেক সময় স্কুলে যেতে আগ্রহী হয় না।
আচার-ব্যবহারে সমস্যা: কিছু শিশু স্কুল পালায় বা ক্লাস রুমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এমন শিশুকে “নষ্ট” মনে করে না খারিজ করা উচিত। বরং তাদের আরও ভালোবাসা, শৃঙ্খলা, এবং পঠন-পাঠনের প্রতি আগ্রহী করা উচিত।
ডিপ্রেশন: সেকেন্ডারি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ডিপ্রেশন বেশি দেখা যায়। এই শিশুরা খুব ছোট কারণে মন খারাপ করে বা অনেক সময় অকারণেই কেঁদে ফেলে। এটি সাময়িক হলেও, সময়ের সাথে এটি মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে এবং শিশু সুইসাইডের মতো চরম সিদ্ধান্তও নিতে পারে।
মনোযোগী হতে না পারা: কিছু শিশুর জন্য দীর্ঘ সময় এক জায়গায় স্থির থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। ভালোভাবে শেখানোর পরও তারা ভালো ফল পায় না, যার ফলে তাদের অমনোযোগিতা আরও বৃদ্ধি পায়। কানে শোনার সমস্যা, ক্লান্তি, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, মানসিক বৈকল্য বা মৃগী (পেটিট মোল এপিলেপসি) এই সমস্যার কারণ হতে পারে।
মাদকাশক্তি: মাদকাশক্তি মাঝে মাঝে সহজে ধরা পড়ে না। যদি শিশুর খাবার বা আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা যায়, তাহলে মাদকাশক্তির সম্ভাবনা বিবেচনা করা উচিত।
এখানকার বাচ্চা রা পড়ালেখায় খুবই অমনোযোগী। তার কারণ হচ্ছে মোবাইল ফোন। কমবেশি সবার কাছে স্মার্টফোন আছে। তাই ছোট বাচ্চারা মোবাইল ফোনের নেশায়ই ঠিক ভাবে পড়ালেখা করতে পারে না। তাই যত দ্রুত রাখা যায় মোবাইল তত ভালো।
শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার প্রতি অমনোযোগী হওয়ার বিশেষ কিছু কারণ সমূহ –
আগের দিনে ভোরবেলায় কুরআন তেলাওয়াত,মক্তবে আরবি পড়ার জন্য যাওয়া,বিকাল বেলায় খেলাধুলা,প্রাইভেট পড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকতো শিশু কিশোররা। সন্ধ্যার পর প্রতিটা ঘরে শোনা যেতো পড়ার আওয়াজ।
ছিলনা বৈদ্যুতিক বাতি, হারিকেন অথবা কূপি জ্বালিয়ে ও পড়া চলত পুরোদমে।
বিলাশ বহুল ঘর না থাকলেও যা ছিল সেখানেই পড়তে কোন সমস্যা হত না কারোরই।টিফিনের জন্য বাবার কাছ থেকে ৫-১০ টাকাই যথেষ্ট ছিলো।
কালো ও নীল রংয়ের বলপেন,পেনসিল,’তা’ দিয়ে সুন্দর করে খাতা বানানো,তার উপর বিভিন্ন ফুলের নকশা আকাঁ হত নিজের মনের মত করে।
পড়ার উপকরণ ছিল বই,খাতা,৫টাকার কলম,সহায়ক হিসেবে গাইড ও গৃহ শিক্ষক।