“চার মাস ধরে রপ্তানি আয় ৪ বিলিয়ন ডলারের উপরে”

বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি সম্প্রতি ইতিবাচক প্রবণতা দেখাচ্ছে। টানা চার মাস ধরে পণ্য রপ্তানি ৪ বিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। সর্বশেষ জানুয়ারি মাসে পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪৪৪ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫.৭০ শতাংশ বেশি।

এ তথ্য আজ (সোমবার) প্রকাশ করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম সাত মাস (জুলাই-জানুয়ারি) সময়ে বাংলাদেশ থেকে মোট ২,৮৯৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১.৬৮ শতাংশ বেড়েছে।

ইপিবির তথ্যে দেখা যায়, জানুয়ারি মাসে তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, চামড়াবিহীন জুতা, হিমায়িত খাদ্য ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। তবে চামড়াজাত পণ্য, পাট, পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল ও প্লাস্টিক পণ্যসহ কিছু পণ্যের রপ্তানি কমেছে। তবে, যেহেতু রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে, তাই এই খাতের উপর নির্ভর করেই সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি ঘটছে। জানুয়ারিতে তৈরি পোশাকের রপ্তানিতে ৫.৫৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, ফলে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিও এর কাছাকাছি।

ইপিবির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং ছাত্র-জনতার প্রতিবাদে জুলাই ও আগস্ট মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমে গিয়েছিল। তবে সেপ্টেম্বর মাসে ১৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটে এবং রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৮৬ কোটি ডলার। অক্টোবর ও নভেম্বরে যথাক্রমে ৪১৩ এবং ৪১১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে অক্টোবরে ১৮.৬৮ শতাংশ এবং নভেম্বরে ১৪.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটে। ডিসেম্বরে ৪১১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানিতে ১৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা যায়।

চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২,৩৫৫ কোটি ডলারের, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। জানুয়ারিতে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় ৩৬৬ কোটি ডলারের, যা ৫.৫৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখায়।

এছাড়া, রপ্তানিতে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের স্থান দ্বিতীয় থেকে সরে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের পক্ষে চলে এসেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৬৭ কোটি ডলারের, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১০.৫ শতাংশ বেশি। জানুয়ারিতে এই পণ্যের রপ্তানি হয়েছে ৭ কোটি ৮৩ লাখ ডলারের, যা ২১.৩৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখায়।

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি হয়েছে ৬৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারের, যা গত বছরের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি। তবে জানুয়ারিতে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৯ কোটি ডলারের, যা গত বছরের জানুয়ারির তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ কম।

এই প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানির সামগ্রিক দৃশ্যমান উন্নতির লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।