ট্রাম্পের স্বাক্ষরে সেনাবাহিনী থেকে ট্রান্সজেন্ডারদের বাদ দেওয়ার নির্বাহী আদেশ

মার্কিন সেনাবাহিনী পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসন সোমবার চারটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছে। সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব আদেশের মধ্যে অন্যতম হলো মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত ট্রান্সজেন্ডার সদস্যদের চাকরি নিষিদ্ধ করা এবং সামরিক বাহিনীর বৈচিত্র্য, ন্যায্যতা ও অন্তর্ভুক্তি কর্মসূচি (ডিইআই) বিলুপ্ত করা।

এছাড়া, কভিড-১৯ টিকা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বরখাস্ত হওয়া সেনা সদস্যদের পুনর্বহাল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ফ্লোরিডা থেকে ওয়াশিংটনে ফেরার সময় এই নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যা নিউ ইয়র্ক পোস্টে প্রথম প্রকাশিত হয়। আদেশগুলো গত শনিবার পিট হেগসেথের প্রতিরক্ষাসচিব হিসেবে শপথগ্রহণের সময় এসেছে।

সামরিক বাহিনীতে বড় পরিবর্তনের পরিকল্পনা

হেগসেথ দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনীতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন, যার মধ্যে ডিইআই কর্মসূচি বন্ধ করা এবং কিছু সেনা সদস্যকে নিষিদ্ধ করার বিষয় রয়েছে। পেন্টাগনে পৌঁছানোর পর হেগসেথ সাংবাদিকদের জানান, “আজ আরো নির্বাহী আদেশ আসছে, যার মধ্যে ডিইআই অপসারণ এবং কভিড-১৯ টিকা না নেওয়া সেনাদের পুনর্বহাল করার বিষয় রয়েছে।”

ট্রান্সজেন্ডারদের নিষেধাজ্ঞা ফেরানোর পটভূমি

২০১৭ সালে, ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে মার্কিন সেনাবাহিনীতে কর্মরত ট্রান্সজেন্ডার সদস্যদের নিষিদ্ধ করেছিলেন। এরপর ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই নিষেধাজ্ঞা বাতিল করেন। তবে ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার পর আবারও বাইডেন প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাহার করেছেন। একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীতে ট্রান্সজেন্ডার সদস্যদের নিষিদ্ধ করার কারণ হলো, তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে দীর্ঘ সময় লাগে, যা সেনা মোতায়েন বা অন্যান্য প্রস্তুতির জন্য উপযোগী নয়।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাম সেন্টারের তথ্য

পাম সেন্টার, একটি স্বাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, জানিয়েছে, ২০১৮ সালে মার্কিন সেনাবাহিনীতে আনুমানিক ১৪ হাজার ট্রান্সজেন্ডার সদস্য ছিলেন। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নিষেধাজ্ঞায় কোন ব্যতিক্রম থাকবে কি না তা স্পষ্ট নয়।

মিসাইল ডিফেন্স শিল্ডের প্রক্রিয়া শুরু

সিএনএন-এ প্রকাশিত আরও একটি তথ্যপত্রে জানা গেছে, ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে একটি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করতে যাচ্ছে। আদেশে “আয়রন ডোম” নামক একটি উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরির আহ্বান জানানো হয়েছে। এটি ভবিষ্যত প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্র, হাইপারসনিক এবং উন্নত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে কার্যকর হবে। তথ্যপত্রে বলা হয়েছে, এই ধরনের আক্রমণ “বিপর্যয়কর হুমকি” হিসেবে বিবেচিত হবে, যদিও বর্তমানে মার্কিন ভূখণ্ডে এ ধরনের কোনো হামলা হয়নি।

এই পরিকল্পনা নিয়ে এখনও খরচ বা সময়সীমা সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।