জনজীবনের সংকট সমাধানে মনোযোগ দেওয়ার জন্য সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের একমাত্র দায়িত্ব দেশের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্মতা হস্তান্তর করা, এবং সব কাজ তাদের একার ওপর চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।
সেলিম মন্তব্য করেন, ‘বর্তমান সরকার যেখানে ছবি প্রকাশ এবং বিশেষ ঘোষণার মাধ্যমে ব্যস্ত, সেখানে জনজীবনের সংকট দূর করার বিষয়ে তাদের কার্যক্রম তেমন দৃশ্যমান নয়।’
এদিন রাজধানীর পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এস কথা বলেন। ওই দিন, ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি সিপিবি সমাবেশে বোমা হামলায় নিহতদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। ২০০১ সালে সংঘটিত এই হামলায় পাঁচজন নিহত হন এবং শতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ২০০১ সালের বোমা হামলা প্রসঙ্গে বলেন, সে সময় সারা দেশ থেকে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ ঢাকায় এসে তাদের দাবী তুলে ধরছিলেন, আর তাদের কণ্রোধ করতে হামলা চালানো হয়েছিল। হামলার পর সরকার বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের কথা বললেও, হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ বিচার হয়নি। তিনি দ্রুত হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার এবং বিচার দাবী করেন।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে গণমানুষের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য বামধারার শক্তির ভূমিকা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ২০০১ সালে বোমা হালার মাধ্যমে লাল পতাকার উত্থান ঠেকানোর চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু তা সফল হয়নি। তিনি বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান।
এছাড়া, প্রিন্স দেশবাসীকে সতর্ক করে বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম শুরু হলেও এখনো তা সঠিকভাবে অগ্রসর হয়নি। সরকারের অক্ষমতা এবং অর্থনৈতিক চাপ বাড়ানোর কারণে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। তিনি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের আহ্বান জানান।
সিপিবির কেন্দ্রীয় সম্পাদক ও শ্রমিক নেতা কাজী রুহুল আমিনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠানের পরিচালনা করা হয়, এবং সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, অতীতে হামলা ও মামলা করে কমিউনিস্টদের পথভ্রষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েিল, কিন্তু তা সফল হয়নি, এবং ভবিষ্যতেও কেউ সেই চেষ্টা করলে তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
শহীদদের স্মরণে সংগীত পরিবেশন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।