ঢাকায় সফররত জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদল জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের কাছে জানতে চেয়েছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করতে পারবে কিনা। এ বিষয়ে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্ম তাহের সাংবাদিকদের জানান, “আমরা বলেছি, কোনো দলের পক্ষে-বিপক্ষে আইনগত কোনো মতামত আমরা দিচ্ছি না। জনগণ, সমাজ এবং পরিস্থিতি ঠিক করবে, তারা কী সিদ্ধান্ত নেয়।”
আজ সোমবার দুপুরে গুলশানে জাতিসংঘ ভবনে জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল জামায়াতে ইসলামীর চার সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
বঠে জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের প্রশ্ন করেছিলেন, আওয়ামী লীগ এখনও নিষিদ্ধ হয়নি, তাদের নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা, এবং তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে কি না? উত্তরে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, “তারা (জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল) জানতে চেয়েছিল, সব দল কি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে। আমরা বলেছি, এ বিষয়ে জনগণ এবং পরিস্থিতি সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের কোনো বিশেষ অবস্থান নেই।”
বিএনপি আগামী জুলাই-আগস্টে সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে, জামায়াত এর বিষয়ে কী ভাবছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বিএনপি বাংলাদেশের একটি বড় দল, এবং তাদের নির্বাচনের ব্যাপারে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। তারা তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে, আমরা বলেছি, প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করা উচিত।”
স্থানীয় সরকা নি্বাচন সম্পর্কে জামায়াতের অবস্থান জানতে চাইলে তাহের বলেন, “আমরা এই বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করছি, এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। আলোচনার পরই আমাদের অবস্থান প্রকাশ করা হবে।”
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব সংলাপ শুরু করে, সংস্কারের মূল বিষয়গুলোতে একট কনসনসাস তৈরি করতে হবে। নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ হতে পারে যদি সংস্কারের অভাব থাকে, তবে সংস্কারের নামে অতিরিক্ত সময়ক্ষেপণও ঠিক হবে না।”
আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের আরও জানান, জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল তাদের কাছে জানতে চেয়েছিল, সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ কী ধরনের সহযোগিতা করতে পারে। জামায়াত নেতা বলেন, “আমরা যেকোনো আন্তর্জাতিক সংস্থাকে স্বাগ জানাই, তবে আমাদের নির্বাচনে হস্তক্ষেপের কোনো অনুমতি নেই। যদি তারা আমাদের কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা দেয়, আমরা তা গ্রহণ করব।”
তিনি বলেন, “আমরা আশা করি, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা সংযোগ থাকতে হবে। এটা নির্বাচন পরিস্থিতি পর্যালোচনায় সহায়ক হবে।” এছাড়া, তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচনের জন্য বড় ধরনের তহবিলের প্রয়োজন হলে, জামায়াত র জন্য জাতিসংঘের সহযোগিতা আশা করছে।
সংবিধান সংশোধন সম্পর্কেও তাহের বলেন, “আমরা সংবিধানে মৌলিক পরিবর্তন চাচ্ছি, যেন প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার নির্বাচিত হতে না পারেন এবং রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী之间 ভারসাম্য বজায় থাকে।”
এ বৈঠকে জামায়াতের প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন কেন্দ্ীয় নিরবাহী পরিষদের সদস্য সাইফুল আলম খান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জোবায়ের এবং কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ।