”অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজার রায় বাতিল, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে খালাস”

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে খালাস: আপিল বিভাগের রায়

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের দেওয়া সাজা বাতিল করার ফলে, খালেদা জিয়াসহ মামলায় অভিযুক্ত সকলেই খালাস পেয়েছেন, যাদের মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও রয়েছেন, যিনি পূর্বে আপিল করতে পারেননি।

আজ, বুধবার, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ একমত হয়ে এই রায় ঘোষণা করেন। আদালত খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ মামলায় অভিযুক্ত তিনজনের করা আপিল মঞ্জুর করেন।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন রায়ের পর জানান, “আপিল মঞ্জুর হয়েছে এবং আদালত নিম্ন আদালত ও হাইকোর্টের রায় বাতিল করেছে। এর মাধ্যমে যারা আপিল করতে পারেননি, তারেক রহমানসহ, তাদেরও খালাস দেওয়া হয়েছে।”

এই মামলায়, ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্টের রায়ের পর খালেদা জিয়া ১০ বছরের সাজা পান, যা বিচারিক আদালতের রায়ের চেয়ে ৫ বছর বেশি ছিল। ২০১৯ সালের মার্চে খালেদা জিয়া পৃথক দুটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন, যা গত বছর নভেম্বর মাসে আপিল বিভাগ মঞ্জুর করে। সাজার কার্যকারিতা স্থগিত করে দেওয়ায়, এর ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়া আপিল করেন।

এছাড়াও, ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ পৃথক আপিল করেন।

৭ জানুয়ারি থেকে এই আপিলের শুনানি শুরু হয়, যা গতকাল মঙ্গলবার শেষ হয়। আজ সকালে প্রধান বিচারপতি রায়ের অংশ ঘোষণা করেন।

এ মামলার মূল অভিযোগ ছিল, এতিমদের সহায়তার জন্য বিদেশ থেকে পাঠানো ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা ক্ষমতার অপব্যবহার করে আত্মসাৎ করা। ২০০৮ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলাটি দায়ের করে। ২০১৮ সালে বিশেষ জজ আদালত-৫ এ মামলার রায় দেয়, যেখানে খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং তারেক রহমানসহ অপর পাঁচজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

হাইকোর্টের রায়েও খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়। এরপর খালেদা জিয়া, শরফুদ্দিন আহমেদ ও কাজী সালিমুল হক কামাল পৃথক আপিল করেন।

রায়ের পর দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান জানান, আদালত চারটি আপিল মঞ্জুর করেছে, যার ফলে হাইকোর্ট ও বিচারিক আদালতের রায় বাতিল হয়েছে। “এমনি, যাদের আপিল করার সুযোগ ছিল না, তাদেরও খালাস দেওয়া হয়েছে,” তিনি বলেন।

এখন দুদক রায়ের পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে সিদ্ধান্ত নেবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।