”ওসমান পরিবারের জালিয়াতি: বিটিআরসির পাওনা ১২৬ কোটি টাকা নিয়ে কেলেঙ্কারি”

শামীম ওসমান পরিবারের প্রতিষ্ঠান থেকে ১২৬ কোটি টাকা পাওনা আদায়ের জন্য বিটিআরসি (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। এই টাকা আদায়ে বিটিআরসি মামলা দায়ের করেছে এবং তদন্তের জন্য কোম্পানির ালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তবে, সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, সাখাওয়াত হোসেন নামে এক ব্যক্তি কীভাবে এত বড় প্রতিষ্ঠানের মালিক হলেন?

রাজধানীর ফকিরাপুলে সাখাওয়াত হোসেনের একটি ছোট ট্রাভেল এজেন্সির অফিস রয়েছে, যেখানে তাঁর আসবাব বলতে একটি টেবিল ও তিনটি চেয়ার ছাড়া কিছুই নেই। অফিস ভাড়া মাত্র ছয় হাজার টাকা। সাখাওয়াতের দাবি, তিনি নিজেই জানতেন না যে তিনি একন কোম্পানির মালিক। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে বিটিআরসি কর্মকর্তারা তাঁর গ্রামের বাড়ি গিয়ে এই তথ্য তাঁর সামনে আনেন। তবে, নথিপত্র অনুযায়ী, ২০১৩ সালে শামীম ওসমান পরিবারের কাছ থেকে কে টেলিকমের মালিকানা সাখাওয়াত, দেবব্রত চৌধুরী ও রাকিবুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হয়, যাঁরা এ বিষয়ে একেবারেই অবগত ছিলেন না।

কে টেলিকম, যা পরে “ইন্টারন্যাশনাল ভয়েস টেল লিমিটেড” নামে পরিচিত হয়, বিদেশ থেকে টেলিফোন কল বাংলাদেশে আনার একটি বড় মাধ্যম ছিল। বিটিআরসি জানিয়েছে, সাখাওয়াতের কোম্পানির কাছে ১২৬ কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সাখাওয়াত, দেবব্রত ও রাকিবুলকে মালিক হিসেবে দেখানো হয়েছে জালিয়াতি করে এবং তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র চুরি করে ভুয়া নথি তৈরি করা হয়েছে।

এই মালিকানা হস্তান্তর বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছ, বিশেষ করে শামীম ওসমান পরিবারের শাসনামলে। ২০১৩ সালে মালিকানা হস্তান্তর হলেও তা নাকি সঠিকভাবে যাচাই করা হয়নি। বিটিআরসি এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা জানতেন যে মালিকানা হস্তান্তর আইনগতভাবে সঠিক হয়নি, কিন্তু তাতে গাফিলতি দেখানো হয়েছে।

অন্যদিকে, রাকিবুল ইসলাম ও দেবব্রত চৌধুরী দাবি করেছেন, তাঁরা জানতেন না তাঁদের নাম কোম্পানির মালিক হিসেবে দেখানো হয়েছে। বিশেষত, রাকিবুল জানান যে তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে এই জালিয়াতি করা হয়েছে এবং তাঁর নাম ব্যবহার করে মুঠোফোনে আর্থিক সেবার (এমএফএস) হিসাব খোলা হয়েছিল।

এ ঘটনায় সুশাসন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা চলছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টি একটি বহুমাত্রিক দুর্নীতি, যেখানে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং রাষ্ট্রীয় তহবিলের ক্ষতি হয়েছে। তাঁর মতে, এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের দুর্নীতি রাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে এবং এর বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।