যশোরে আজহারীর মাহফিলে মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার খোয়া, তিনশ’ জিডি!

যশোরে মিজানুর রহমান আজহারীর ওয়াজ মাহফিলে উপস্থিত অসংখ্য মানুষের মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার খোয়া গেছে। শুক্রবার রাতে শহরতলী পুলেটহাটস্থ আদ-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বর এবং আশপাশের এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় ভুক্তভোগীরা জিডি করতে ভিড় করছেন।

থানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শনিবার বেলা তিনটা পর্যন্ত তিনশ’টি জিডি হয়েছে এবং ভুক্তভোগীদের আগমন দেখে ধারণা করা হচ্ছে, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

যশোর শহরতলির পুলেরহাটস্থ আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশন আয়োজিত তিনদিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের শেষ দিন শুক্রবার ছিল। এইদিন রাতেই খ্যাতিমান বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী তার ওয়াজ প্রদান করেন। তার আগমনে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নামে মাহফিলস্থলে। শুক্রবার সকাল থেকেই শীত উপেক্ষা করে মানুষ জমায়েত হতে শুরু করে। বিকেল থেকে মহাসড়কে নারী, শিশু ও পুরুষের ভিড় দেখা যায়, যার ফলে যানজট সৃষ্টি হয় এবং অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছান। মাহফিল প্রাঙ্গণে কয়েক লাখ মানুষের সমাগম ঘটে।

রাত সাড়ে ১০টার পর মাহফিল শেষ হলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পদদলিত হয়ে একাধিক ব্যক্তির মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ে। আহতের সংখ্যা অর্ধশতাধিক বলে জানা যায়। এছাড়া মোবাইল ফোন, স্বর্ণলংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যাওয়ার খবর পাওয়া যায়।

যশোর জেনারেল হাসপাতাল এবং থানা সূত্রে জানা যায়, ২১ জন আহত ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে ১০ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন এবং ১১ জন গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ডিউটি অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, “শুক্রবার রাত থেকে অসংখ্য মানুষ মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার হারানোর ঘটনা নিয়ে থানায় জিডি করতে আসছেন। যারা তাদের মোবাইলের ডকুমেন্ট দেখাতে পেরেছেন, তারা জিডি করতে সক্ষম হয়েছেন।” তিনি আরও জানান, শনিবার সকালে ভিড় আরও বেড়ে গেছে এবং কয়েক হাজার জিডি হতে পারে।

নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকে স্বর্ণালংকার ও মোবাইল হারিয়ে থানায় জিডি করতে আসছেন। সদরের রূপদিয়া থেকে ইব্রাহিম হোসেন জানান, তার মায়ের গলার হার খোয়া গেছে। শহরতলী নওয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা হয়রত হোসেন বলেন, তার বউয়ের গলার চেইন হারিয়ে গেছে।

থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, তিনদিন ব্যাপী মাহফিলে ৫ থেকে ৭ লাখ মানুষ সমাগম হয়েছিল এবং অসংখ্য মানুষ তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র হারিয়েছে। তিনি আরও বলেন, “মাহফিলের সময়ে কোনো মৃত্যু বা পদদলিত হয়ে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তা এড়িয়ে চলতে অনুরোধ করছি।”

এ মাহফিল ১ জানুয়ারি শুরু হয়েছিল এবং তিনদিন ব্যাপী চলার পর শুক্রবার রাতে শেষ হয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।