নেত্র নিউজ তার পঞ্চম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ২০২৪ সালের বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী দশজন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর তালিকা প্রকাশ করেছে। ২০২৪ সাল বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক বছর, যার ভালো-মন্দ মিলিয়ে এই ব্যক্তিরা সরাসরি বা পরোক্ষভাবে দেশের গতিপথ নির্ধারণে ভূমিকা রেখেছেন। নতুন বছরের শুরুতে ২০২৪ সালের প্রভাবশালী এই মানুষদের বিশ্লেষণ ভবিষ্যতের জন্য একটি মূল্যবান শিক্ষা হয়ে উঠবে।
১০ম স্থান: শেখ হাসিনা
৭ জানুয়ারি শেখ হাসিনা একদলীয় শাসনব্যবস্থার চূড়ান্ত নেতা হিসেবে নিজের অবস্থান দৃঢ় করেন। শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরবর্তী নেতারা যেখানে ব্যর্থ হয়েছেন, সেখানে তিনি সফল হন। তবে ১৪ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে তার রূঢ় মনোভাব তরুণ সমাজকে আওয়ামী লীগের স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করে তোলে। পরবর্তী তিন সপ্তাহে রাষ্ট্রীয় বাহিনী এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগের মিলিশিয়ারা তার নির্দেশনায় ১,৫০০ জনেরও বেশি নাগরিককে হত্যা করে। ১৫ বছর ৬ মাস শাসন করার পর ৫ আগস্ট তাকে ভারত পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়।
৯ম স্থান: ওয়াকার-উজ-জামান
ওয়াকার-উজ-জামান ২০২৪ সালে শেষ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী থেকে জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন এবং জাতিসংঘের চাপের কারণে সামরিক বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায় এড়ানোর জন্য একটি মাঝামাঝি অবস্থান নেয়। ৫ আগস্টের পর তিনি দেশের সাধারণ নির্বাচনের সময়সূচি নির্ধারণে প্রথম পদক্ষেপ নেন।
৮ম স্থান: মুহাম্মদ ইউনুস
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মুহাম্মদ ইউনুসের কারাবরণ অবধারিত ছিল, তবে বছরের মাঝামাঝি সময়ে ছাত্র আন্দোলন তাকে শেখ হাসিনার বিকল্প হিসেবে সামনে নিয়ে আসে। যদিও এটি নিশ্চিত নয় যে, তাকে ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশে আনার জন্য বিমানের ব্যবহার করা হয়েছিল কিনা।
৭ম স্থান: তারেক রহমান
২০২৪ সালের শেষে তারেক রহমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন। আওয়ামী লীগের ব্যর্থ শাসন তার অতীতের দুর্নীতি, সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং স্বৈরাচারী কার্যকলাপকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছে। তিনি দলকে সংগঠিত করেছেন এবং নিজেকে একজন গণতান্ত্রিক নেতা হিসেবে পরিচিত করেছেন।
৬ষ্ঠ স্থান: বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল দল
নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার যেখানে অবনতির দিকে, সেখানে ৩০ অক্টোবর সাফ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল দল জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। এই সাফল্য বাংলাদেশের নতুন আশার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
৫ম স্থান: শফিকুল আলম
২০২৪ সালে শফিকুল আলম দুইভাবে আলোচিত হয়েছেন। প্রথমত, একজন সাংবাদিক হিসেবে তিনি গ্রীষ্মকালীন বিদ্রোহের সময় সত্য উন্মোচনে ভূমিকা রাখেন। দ্বিতীয়ত, তিনি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব হিসেবে পরিচিতি পান।
৪র্থ স্থান: গুমের তদন্ত কমিশন
গুমের তদন্ত কমিশনের সদস্যরা বাংলাদেশের অন্যতম সাহসী মানুষ। তাদের কাজ সামরিক বাহিনীর অপকর্ম প্রকাশ করেছে এবং এটি সফল হলে রাষ্ট্রের কাঠামো স্থায়ীভাবে পরিবর্তিত হতে পারে।
৩য় স্থান: প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স অফ বাংলাদেশ (পুসাব)
পুসাবের অসাধারণ সংগঠন দক্ষতার কারণে শেখ হাসিনার পতনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাদের সক্রিয়তা বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত বহন করছে।
২য় স্থান: ‘সেমিনাল সেভেন’
নাহিদ ইসলাম এবং তার দল ২০২৪ সালের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক প্রজন্মের উত্থান ঘটেছে।
১ম স্থান: আবু সায়েদ
আবু সায়েদের সাহস এবং মানবিকতা স্বৈরতন্ত্রের পতনের প্রতীক। তার আত্মত্যাগ দেশের স্বাধীনতার জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।