এনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মন্তব্য করেছেন যে, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় কোনো রাজনৈতিক দল গঠিত হলে তা সরকারের গ্রহণযোগ্যতা কমিয়ে দেবে। তিনি আরও বলেন, যদি স্বৈরাচারের অধীনে নির্বাচিত স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরা এবং সব অপরাধী একত্র হয়ে কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দেয় বা নতুন দল গঠন করে, তবে তা অপরাধীদের দল হিসেবে পরিণত হবে।
৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং তার নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রচেষ্টার প্রতি ইঙ্গিত করে রিজভী এসব কথা বলেন। তিনি আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কাটাশুরে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন।
রিজভী বলেন, রাজনৈতিক দল গঠনের অধিকার সবার আছে, তবে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দল গঠন করা হলে তা সরকারের গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট করবে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশীজনদের গণতন্ত্রের মূল্যবোধকে শ্রদ্ধা করতে হবে। তিনি বলেন, স্বৈরাচারের প্রভাবে নির্বাচিত স্থানীয় প্রতিনিধিরা এবং অপরাধীরা একত্র হয়ে কোনো দল গঠন করলে, তা অপরাধীদের দল হিসেবে চিহ্নিত হবে। বাংলাদেশের জনগণ যথেষ্ট সচেতন এবং তারা সত্য জানে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে রিজভী বলেন, কোনো ভুল হলে ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না। তিনি সতর্ক করেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার কারণে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হতে পারে। তিনি আরও বলেন, জনগণ দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা আশা করেনি এবং যে রোডম্যাপ অন্তর্বর্তী সরকার দিয়েছে তা প্রলম্বিত, যা জনগণের প্রত্যাশার সঙ্গে মেলে না।
রিজভী আরও বলেন, বিএনপি কখনো আন্দোলন ও সংগ্রাম থেকে পিছপা হয়নি। তারা দলীয় স্বার্থের জন্য কখনো কাজ করেনি, বরং জাতির প্রতিটি অর্জনে গর্বিত। ১৯৭১, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর, ১৯৯০ এবং ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে বিএনপির গৌরবোজ্জ্বল অবদান ছিল।
তিনি বলেন, ৭ নভেম্বরের আন্দোলন ছিল আওয়ামী লীগের কৃতকর্মের প্রতিবাদ, এবং শেখ হাসিনা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এরশাদকে জাতীয় বেইমান বলে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন। ৯০-এর গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ গর্বিত হতে পারে না, এবং ৫ আগস্টের আন্দোলন শেখ হাসিনার জন্য গর্বের বিষয় নয়, এটি পালিয়ে যাওয়ার ইতিহাস। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা যে দেশে আশ্রয় নিয়েছেন, সেই দেশের সরকার বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান, সদস্যসচিব মোকছেদুল মোমিন, বিএনপির নেতা মাহমুদুর রহমান, মোহাম্মদপুর থানা বিএনপির আহ্বায়ক শুকুর মাহমুদ, এবং জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েল প্রমুখ।