“আসলেই কি আপেল খেলে রোগমুক্ত থাকা সম্ভব?”

কথায় বলে, ‘অ্যান অ্যাপল এ ডে কিপস দ্য ডক্টর অ্যাওয়ে’, অর্থাৎ প্রতিদিন একটি আপেল খেলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না, এবং এর মাধ্যমে সুস্থ থাকতে পারবেন। তবে, আসলেই কি রোজ একটি আপেল খেলে স্বাস্থ্য ঠিক রাখা সম্ভব? অথবা, সবাই কি প্রতিদিন আপেল খেতে পারবেন? চলুন, এসব প্রশ্নের উত্তর জেনে নিই।
সুস্থ থাকতে প্রতিদিন ফলমূল খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যেকোনো ফল বেছে নিলেও তা উপকারে আসবে। আপেলে রয়েছে পর্যাপ্ত ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান। খোসাসহ আপেল খেলে আপনি পাবেন পর্যাপ্ত আঁশও। তবে, আপেলের পরিবর্তে অন্যান্য ফল খেলে আপনি ভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান পাবেন। এমনটাই জানিয়েছেন রাজধানীর গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শম্পা শারমিন খান।
ফলমূল কেন ভালো?
শাকসবজিতেও পুষ্টি উপাদান রয়েছে, কিন্তু এগুলো থেকে ভিটামিন বি এবং ভিটামিন সি পাওয়া যায় না। রান্নার সময় এই ভিটামিনগুলো সহজেই নষ্ট হয়ে যায়।
আপেলে কী রয়েছে?
আপেলে রয়েছে আয়রন, পটাশিয়াম, ফসফেট, এবং ভিটামিন সি। আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতে ভিটামিন সি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবেও কাজ করে। আপেলে খানিকটা ভিটামিন বি-ও পাওয়া যায়।
এছাড়া, আপেলের খোসার আঁশ রক্তের খারাপ চর্বি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, যা হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। আপেলে পানির পরিমাণও বেশী, তাই এটি পানিশূন্যতা রোধে সাহায্য করে।
রোজ আপেল খাওয়া কি আসলেই ভালো?
আপেল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, তবে লাল আপেল খেলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। যদি আপনি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তবে রোজ অর্ধেক লাল আপেল খাওয়া যেতে পারে। অন্যদিকে, সবুজ আপেল খেলে ওজন বাড়ানোর ঝুঁকি নেই।
কিছু কিছু লোকের আপেল খাওয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এই সমস্যা কাটাতে আরও আঁশসমৃদ্ধ খাবার এবং পর্যাপ্ত পানি খাওয়া উচিত।
যদি কারো ডায়াবেটিস বা কিডনির সমস্যা থাকে, তবে আপেল কিংবা অন্য ফলগুলো কী পরিমাণে খাওয়া উচিত, তা বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নেয়া ভালো।
আপেলের বিকল্প কী?
আপেল দেশের ফল নয়, তবে এর দেশীয় বিকল্প রয়েছে। আপনি রোজ একটি পেয়ারা খেতে পারেন, যা স্বাস্থ্যকর। এছাড়া, অন্যান্য মৌসুমি ফলও খাওয়া যেতে পারে।
তবে, শুধুমাত্র ফলমূল খেলে আপনি সুস্থ থাকবেন না। সুস্থতার জন্য সুষম পুষ্টি, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং মানসিক চাপমুক্ত জীবনযাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।