বয়স বাড়ার সাথে সাথে পুরুষের দায়িত্ব বৃদ্ধি পায়, আর এর সাথে নিজেদের শারীরিক যত্ন নেওয়ার জন্য সময় মিলতে থাকে না। অফিস, সংসার, বাইরের কাজ—এসব সামলে চলা এক বিশাল দায়িত্ব। তবে, বয়স ৪০ পেরোনোর পর পুরুষদের শারীরিক স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি।
যদিও অনেক পুরুষ নিজেদের শরীরের দিকে তেমন মনোযোগ দেন না, কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে শরীরের পুষ্টির চাহিদা পরিবর্তিত হয়। শরীরের শক্তি কমে যায় এবং বয়সজনিত নানা সমস্যা দেখা দেয়। বাইরের দিক থেকে সুস্থ ও শক্তিশালী দেখালেও অনেকেই ভেতরে দুর্বল হয়ে পড়েন। তাই বয়সের প্রতি প্রস্তুতি নিতে এখন থেকেই খাদ্যতালিকার দিকে নজর দেওয়া উচিত।
চর্বিযুক্ত মাছ
চর্বিযুক্ত মাছ যেমন রুই, ইলিশ, পমফ্রেট, পাঙাশ, কাতলা, বোয়াল মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরপুর। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
সবুজ শাকপাতা
পালং, পুঁই, কলমি, বাধাকপি, লেটুস ইত্যাদি শাকপাতা ভিটামিন এ, সি, এবং কেসহ নানা পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। এগুলো হাড়ের স্বাস্থ্য, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
আস্ত শস্য
গম, ব্রাউন রাইস, যব, ওটস, কুইনো ইত্যাদি গোটা শস্য ফাইবার এবং ভিটামিনে পরিপূর্ণ। এগুলি হজম ক্ষমতা বাড়ায়, রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং কোলেস্টরল কমাতে সাহায্য করে।
বাদাম ও বীজ
ব্রেকফাস্টে বা স্ন্যাকসে আমন্ড, আখরোট, চিয়া বীজ, ফ্লেক্সসিড ইত্যাদি রাখুন। এগুলি শরীরকে স্বাস্থ্যকর চর্বি, ফাইবার এবং প্রোটিন সরবরাহ করে এবং আখরোটে উপকারী ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে।
ফল
প্রতিদিন অন্তত একটি ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ুন। আপেল, পেয়ারা, স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, রাস্পবেরি, আঙুর, বেদানা এগুলি শরীরের জন্য উপকারী।
টমেটো
টমেটো লাইকোপেন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যা প্রস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় এবং হার্টের স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো।
চর্বিহীন প্রোটিন
রেড মিট কমিয়ে মুরগির মাংস, মাছ, ডিম এবং মুসুর ডাল, ছোলা খান। এই খাবারগুলো পেশীর রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিপাকক্রিয়ার জন্য উপকারী। ডিমে প্রোটিন, ভিটামিন ডি, এবং কোলিন থাকে, যা বিশেষ করে ৪০ বছর বয়সী পুরুষদের জন্য অপরিহার্য।
কপি জাতীয় সবজি
ফুলকপি, ব্রোকোলি, ব্রাসেলস স্প্রাউট, বাঁধাকপি এসব সবজি শরীরের প্রদাহ কমায় এবং বিভিন্ন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
ডার্ক চকোলেট
ডার্ক চকোলেট ফ্ল্যাভোনয়েডে সমৃদ্ধ, যা রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। নিয়মিত মাঝারি পরিমাণে ডার্ক চকলেট খাওয়ার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং আয়ু বাড়ে।
এই খাদ্যগুলির প্রতি মনোযোগ দিয়ে ৪০ পেরোনোর পর পুরুষদের শারীরিক স্বাস্থ্যের দিকে সঠিকভাবে নজর দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।