আমরা যা খাচ্ছি, তা আসলেই পাচ্ছি কি?

খাবার আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আমাদের ক্ষুধা নিবারণ এবং পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি শরীরের সঠিক কার্যকারিতা নিশ্চিত করে। তবে খাবার উৎপাদনের পর থেকে তা আমাদের প্লেটে পৌঁছানোর বিভিন্ন ধাপে পুষ্টির অপচয় হতে পারে। এর ফলে অনেক সময় খাবারের পুষ্টি উপাদান শরীরে পৌঁছানোর আগেই হারিয়ে যায়। আজকের আলোচনায় আমরা জানব কেন খাবারে পুষ্টি উপাদান হারিয়ে যায় এবং কীভাবে আমরা তা রোধ করতে পারি।


যে কোন ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
৫০% পর্যন্ত ডিসকাউন্টে তৈরি করুন আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য
কর্পােরেট ওয়েবসাইট
ই-কমার্স ওয়েবসাইট অথবা নিউজপোর্টাল  ওয়েবসাইট।

নিচে কিছু সহজ এবং কার্যকরী টিপস দেওয়া হলো:

  1. সঠিক রান্নার পদ্ধতি: সবজি ও ফলের ক্ষেত্রে কাঁচা খাওয়ার চেয়ে রান্না করলে ভিটামিন এবং মিনারেলের অপচয় ঘটে, বিশেষত ভিটামিন-বি ও সি। এসব ভিটামিনের অপচয় রোধ করতে এগুলো যতটা সম্ভব কাঁচা খাওয়া ভালো। তবে, রান্নার সময় সবজি স্টিম করে বা অল্প তেলে ভাজা পুষ্টির অপচয় কম করে। ডুবো তেলে ভাজার চেয়ে স্টার ফ্রাই বেশি উপকারী।
  2. বাদাম ও বীজ ভিজিয়ে অঙ্কুরিত করা: বাদাম এবং বীজে থাকা ফাইটিক এসিড, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রনের শোষণ বাধাগ্রস্ত করে। এগুলোকে কয়েক ঘণ্টা পানি ভিজিয়ে রেখে পরে শুকিয়ে খাওয়া উচিত। শস্য ও ডালও অঙ্কুরিত করে খেলে এতে উপস্থিত পুষ্টি উপাদান সহজে শোষিত হয়।
  3. ফল ও সবজি খোসাসহ খাওয়া: কিছু ফল এবং সবজির খোসা খুবই পুষ্টিকর, যেমন আলু, গাজর, শশা, আপেল, নাশপাতি ইত্যাদি। এসব খোসাসহ খাওয়া পুষ্টির পরিমাণ বৃদ্ধি করে, তাই ভালোভাবে ধুয়ে খোসাসহ খাওয়া উচিত।
  4. স্বাস্থ্যসম্মত তৈল জাতীয় খাবার: কিছু চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন যেমন A, D, E, K এর শোষণ উন্নত করতে এগুলো তেল বা চর্বি জাতীয় খাবারের সঙ্গে খাওয়া উচিত। তবে সেই তেল হতে হবে স্বাস্থ্যকর, যেমন বাদাম তেল, জলপাই তেল, মাছের তেল বা ডিমের কুসুম।
  5. সতেজ ফল ও সবজি: সতেজ ফল ও সবজিতে সবচেয়ে বেশি পুষ্টি থাকে। প্রক্রিয়াজাত বা সংরক্ষিত ফল ও সবজির পুষ্টি তাজার তুলনায় কম হয়। তাই সিজনাল এবং সতেজ ফল ও সবজি খাওয়া উচিত, যা বাড়িতে বা ছাদ বাগানে ফলানো যেতে পারে।
  6. সঠিক খাদ্য সমন্বয়: কিছু পুষ্টি উপাদান একে অপরের শোষণকে বাধাগ্রস্ত করে, যেমন ক্যালসিয়াম এবং আয়রন বা জিঙ্ক। এসব উপাদান একসাথে খাওয়া হলে পুষ্টির অপচয় হয়। কিন্তু কিছু পুষ্টি উপাদান যেমন আয়রন এবং ভিটামিন সি একে অপরকে শোষণে সাহায্য করে। তাই খাদ্য সমন্বয় সচেতনভাবে করতে হবে।
  7. ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়া: খাবারের পরিপাক প্রক্রিয়া মুখগহ্বরে শুরু হয়। খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খেলে তা হজমে সহায়ক হয় এবং শরীরের পুষ্টি উপাদান সহজে শোষিত হয়। তাই খাবার যতটা সম্ভব ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়া উচিত।
  8. অন্ত্রের যত্ন নেয়া: অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে পুষ্টি উপাদান সঠিকভাবে শোষিত হয়। উচ্চ প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে দূরে থাকার পাশাপাশি প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

শেষে, কিছু কথা—খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করার সময় যখন খাবার অত্যাধিক তাপ, আলো বা অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসে, তখন এর পুষ্টি উপাদান নষ্ট হয়ে যায়। তাই প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে তাজা খাবার খাওয়া সবচেয়ে উপকারী। এছাড়াও, খাদ্যের উৎপত্তি স্থান এবং সঠিক প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।