“বাংলাদেশ ব্যাংকের ছাপানো টাকা কোথায় রয়েছে এবং কার কাছে কত পরিমাণ আছে”

বাংলাদেশ সরকার তারল্য সংকটে থাকা ছয় ব্যাংককে ২২,৫০০ কোটি টাকা দেবে: নতুন টাকা ছাপানোর প্রয়োজন নেই


যে কোন ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
৫০% পর্যন্ত ডিসকাউন্টে তৈরি করুন আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য
কর্পােরেট ওয়েবসাইট
ই-কমার্স ওয়েবসাইট অথবা নিউজপোর্টাল  ওয়েবসাইট।

বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে চলমান তারল্য সংকটের সমাধানে সরকার ছয়টি দুর্বল ব্যাংককে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সহায়তা দিতে যাচ্ছে। যদিও অনেকের মনে হতে পারে, নতুন টাকা ছাপানো হবে, তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এর জন্য নতুন নোট ছাপানোর প্রয়োজন নেই। মূলত এই অর্থের বড় অংশ ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে সরবরাহ হবে, আর বাকি অংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্ট থেকে সরবরাহ করা হবে।

ছাপানো টাকার বাস্তবতা

সম্প্রতি ব্যাংক খাতে নতুন টাকা ছাপানোর বিষয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে, বিশেষত যখন জানানো হয়েছে যে, ছয়টি ব্যাংককে ২২,৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। অনেকের মনে হতে পারে, সরকার টাঁকশালের যন্ত্রে নতুন টাকা ছাপিয়ে তা ব্যাংকগুলোতে পাঠাবে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, সব টাকা ছাপানো হয় না। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে প্রচুর পরিমাণ ছাপানো টাকা থাকে, যা সময়মতো বাজারে ছাড়া হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ছাপানো টাকাকে “রিজার্ভ মানি” বা “হার্ড মানি” বলা হয়। সেপ্টেম্বর ২০২৪ এর শেষে ব্যাংক খাতে মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা, এবং তখন বাজারে ছাপানো টাকার পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৭৫ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ, বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে ছাপানো ১০০ টাকার মাধ্যমে প্রায় পাঁচগুণ অর্থের মূল্য তৈরি করে। তবে অর্থনীতিবিদরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন টাকা ছাপানোর পক্ষে নয়।

ডিজিটাল লেনদেনের ভূমিকা

দেশের অধিকাংশ লেনদেন এখন ডিজিটাল মাধ্যমে হয়, যা প্রিন্টিং টাকা না ছাপিয়ে সম্পন্ন হয়। উদাহরণস্বরূপ, একজন ব্যক্তি প্রতিমাসে বেতন পাওয়ার পর তার দৈনন্দিন খরচের অধিকাংশই ডিজিটাল মাধ্যমে পরিশোধ করেন, কেবলমাত্র কিছু নগদ টাকা যাতায়াত খরচ বা জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করেন। ফলে টাকা ছাপানোর প্রয়োজনীয়তা কমে যায় এবং অর্থনৈতিক লেনদেনের সঠিক হিসাবও বজায় থাকে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্ট এবং বাজারে ছাপানো টাকা

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যাংকগুলোর কাছে বাজারে চলমান টাকা সরবরাহ করার জন্য সব টাকা ছাপানো হয় না। যে টাকা ব্যাংক থেকে বাজারে যায়, তা মানুষের কাছে পৌঁছে এবং বেশিরভাগই আবার ব্যাংকে ফিরে আসে না। কিছু টাকা ব্যাংকগুলোর ভল্টে জমা থাকে, যা দৈনন্দিন নগদ চাহিদা পূরণে ব্যবহার হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে এক বড় অংশ টাকা জমা থাকে, যা বিভিন্ন সময়ে ব্যবহৃত হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আগস্ট মাসে ব্যাংকগুলোর বাইরে কিছুটা পরিমাণে টাকা বৃদ্ধি পায়, তবে সেপ্টেম্বর মাসে তা আবার ফিরে আসে। বিশেষ করে কয়েকটি ব্যাংক থেকে গ্রাহকরা টাকা তোলার কারণে এই বৃদ্ধি দেখা যায়।

নতুন টাকার প্রয়োজন নেই

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ছাপানো টাকার পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৭৫ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা, যা আগস্টে ছিল ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা। এক মাসে এই পরিমাণ কমে গেছে প্রায় ১০ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। যদিও বাজারে প্রচলিত টাকার পরিমাণও কিছুটা কমে এসেছে, তবুও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে জমা থাকা টাকার কারণে নতুন টাকা ছাপানোর প্রয়োজন পড়বে না।

এছাড়া, নতুন ২২,৫০০ কোটি টাকার বড় অংশই ডিজিটাল মাধ্যমে লেনদেন করা হবে এবং বাকি টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্ট থেকে সরবরাহ করা হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।