থোকায় থোকায় ঝুলছে রসালো কমলা: কোথায় গেলে দেখবেন এমন সুন্দর দৃশ্য”

রাঙামাটির চায়না কমলা: সফল চাষের এক নতুন দিগন্ত


যে কোন ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
৫০% পর্যন্ত ডিসকাউন্টে তৈরি করুন আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য
কর্পােরেট ওয়েবসাইট
ই-কমার্স ওয়েবসাইট অথবা নিউজপোর্টাল  ওয়েবসাইট।

ঘন সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে থোকায় থোকায় ঝুলছে কমলা, যা দূর থেকে দেখলে মনে হয় গাছের পাতার মধ্যে আলো জ্বলছে। রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার দোসরপাড়ার তৈ–চাকমা ছড়ায় অবস্থিত এক সুদৃশ্য কমলার বাগান দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছে মানুষ। তারা ছবি তুলছেন, আর এই দৃশ্য উপভোগ করছেন। রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক সংলগ্ন এই বাগানের মালিক সুদত্ত চাকমা, যিনি তৈ–চাকমা মৌজার প্রধান হেডম্যান।

গত শুক্রবার সুদত্ত চাকমা তাঁর বাগান পরিদর্শন করিয়ে দেখালেন। তিনি জানান, ‘‘চার বছর আগে কমলার চাষ শুরু করেছিলাম, তবে আমার মূল উদ্দেশ্য ছিল পাহাড়ে চায়না কমলা চাষ করা। বর্তমানে আমার বাগানে আট শতাধিক কমলার গাছ রয়েছে, এর মধ্যে ১৭টি চায়না কমলার গাছে এই বছর বেশ ভালো ফলন হয়েছে। প্রতিটি গাছে কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ মণ কমলা ধরেছে। চায়না কমলা নিয়ে আমি অনেক আগ্রহী।’’

রাঙামাটির চায়না কমলা স্থানীয় বাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় খ্যাতি লাভ করেছে, এর সুস্বাদু, মিষ্টি এবং রসে ভরা স্বাদের জন্য। গত ছয় মাস আগে যখন গাছগুলোতে ফুল এবং ফল আসা শুরু হয়, তখন তিনি এক মৌসুমের ফল বিক্রি করেন ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকায়। পরে, ২১ নভেম্বর আরও একটি ব্যবসায়ীর কাছে ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকায় ফলন আসা কমলা বিক্রি করেন। স্থানীয় বাজারে চায়না কমলা বিক্রি হয় ২০০ টাকা কেজিতে।

সুদত্ত চাকমার বাগান থেকে এক মৌসুমের কমলা কিনেছেন শান্তি চাকমা, যিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘‘কমলার বাগানটি সম্ভাবনাময় দেখে আমি এক মৌসুমের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে কিনে নিয়েছি। গত বর্ষাকালে তৈ–চাকমা ছড়ার পানি বেড়ে গেলে কয়েক দফা বাগানটি তলিয়ে যায়, তবে দীর্ঘ সময় পানি স্থায়ী ছিল না। তখন আমরা চিন্তিত ছিলাম, যদি গাছগুলো নষ্ট হয়ে যায়। তবে পরবর্তী সময়ে ভালো পরিচর্যার মাধ্যমে ফলন এসেছে।’’

২০১৬ সাল থেকে রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার সাবেক্ষ্যং ও বুড়িঘাট ইউনিয়নে কমলার চাষ ব্যাপকভাবে শুরু হয়েছে। এর পাশাপাশি বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, বরকল, লংগদু ও জুরাছড়ি উপজেলাতেও কমলার চাষ হচ্ছে। চলতি মৌসুমে রাঙামাটি জেলায় মোট ২,১০০ একর জমিতে কমলার চাষ হয়েছে, যার মধ্যে নানিয়ারচর উপজেলায় ৬০০ একর জমিতে চাষ করা হয়েছে। এসব বাগান থেকে প্রায় ৮,৫০০ মেট্রিক টন কমলা উৎপাদিত হবে এবং এ বছর প্রায় ২১০ কোটি টাকার কমলা বিক্রির প্রত্যাশা করা হচ্ছে, জানায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মুনিরুজ্জামান বলেন, ‘‘এখানে চায়না, দার্জিলিং এবং স্থানীয় জাতের কমলা চাষের জন্য মাটি উপযোগী। তবে শুষ্ক মৌসুমে সেচের অসুবিধার কারণে সব জায়গায় কমলা চাষ করা সম্ভব নয়। তবে সুদত্ত চাকমার চায়না কমলার বাগানে খুব ভালো ফলন হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে চাষ করা হলে চায়না কমলার চাষে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।’’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।