গোসলের আগে ছোট্ট শিশুকে তেল মালিশ করানোর প্রচলন বহু পরিবারে রয়েছে, এবং বড় হয়ে যাওয়ার পরও ত্বকের সুরক্ষায় তেল মালিশ একটি কার্যকরী পদ্ধতি। সব বয়সেই ত্বকের জন্য তেল উপকারী, তবে প্রশ্ন হলো—গোসলের আগে তেল মালিশ করা উচিত, না গোসলের পরে? আর সব তেল কি সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী?
ময়েশ্চারাইজার হিসেবে তেল একটি প্রাকৃতিক বিকল্প হতে পারে, যা ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং উজ্জ্বলতা বাড়ায়। নিয়মিত তেল মালিশ করলে ত্বকে বলিরেখা দেরিতে আসে, অর্থাৎ এটি ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
তবে গোসলের আগে তেল মালিশ করলে তেল ধুয়ে যায় এবং তেলের কার্যকারিতা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। গোসলের পরপর, যখন ত্বক ভেজা থাকে, তখন তেল মালিশ করলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড অ্যাসথেটিক ডার্মাটোলজি বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. সিনথিয়া আলম এ বিষয়টি পরামর্শ দিয়েছেন।
তেল মালিশ করতে হলে বৃত্তাকার গতিতে, ত্বকের নিচের অংশ থেকে ওপরের দিকে করতে হবে। এভাবে তেল ত্বকে ভালোভাবে শোষিত হয়। তেল মালিশের পর অতিরিক্ত বাইরে গেলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত, কারণ তেল মালিশের পর ত্বক ধুলা শোষণ করতে পারে।
তেল মালিশের সবচেয়ে ভালো সময় হলো ঘুমানোর আগে। রাতে গোসল করলে গোসলের পর তেল মালিশ করা ভালো। দিনের বেলা গোসল করলেও একইভাবে তেল মালিশ করা যেতে পারে, তবে বাইরে যাওয়ার আগে তেল শুধুমাত্র শরীরের ঢাকা অংশে লাগানো উচিত।
তেল বাছাইয়ের সময়, নারকেল তেল সব ধরনের ত্বকের জন্য উপকারী। বয়োজ্যেষ্ঠদের জন্যও এটি ভালো। জলপাই তেলও ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে এটি প্রাপ্তবয়স্কদের ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য পুরোপুরি কার্যকরী নাও হতে পারে। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য জোজোবা তেল বা আর্গন অয়েল ভালো, যা ত্বকে আটকে থাকে না এবং ময়লা বের করে আনে।
ব্রণ থাকলে রাতে একবার টি ট্রি তেল ব্যবহার করা যেতে পারে, যা বয়সের ছাপ কমাতেও সাহায্য করে। তবে গোলাপ তেল ত্বকে আটকে থেকে দাগ সৃষ্টি করতে পারে, তাই এটি ত্বকের জন্য উপযুক্ত নয়।
শিশুদের ত্বকে তেল মালিশ করার পর রোদে নিয়ে যাওয়া উচিত নয়, কারণ এতে ত্বকে অস্বস্তি ও কালচে ভাব আসতে পারে। শিশুদের গায়ে রোদে তেল না মেখে নিয়ে যাওয়াই শ্রেয়।
সব মিলিয়ে, তেল মালিশ ত্বকের জন্য একটি কার্যকরী প্রাকৃতিক পদ্ধতি, তবে তা সঠিক সময়ে এবং সঠিক তেল ব্যবহার করে করা উচিত।