শিশুর জন্মের পর প্রায় ছয় মাস বয়স থেকে দাঁত ওঠা শুরু হয়, যাকে দুধদাঁত বলা হয়। সাধারণত এই দুধদাঁত পড়ে গিয়ে ছয় থেকে সাত বছর বয়সে স্থায়ী দাঁত ওঠা শুরু হয়, তবে এটি একেকটি শিশুর ক্ষেত্রে আগে বা পরে হতে পারে।
প্রতিটি দুধদাঁত পড়ার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে, যা সাধারণত ১২ বছর বয়সের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। এটি একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া এবং শিশুর বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
শিশুর দাঁত পড়া তার জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা। যখন দাঁত নড়তে শুরু করে, তখন কিছু শিশু আনন্দিত হয় এবং ভাবে, “আমি বড় হচ্ছি”, আবার কিছু শিশু ভয় পেয়ে যায়, মনে করে কিছু খারাপ হতে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তাদেরকে শান্ত ও আশ্বস্ত করতে হবে, তাদের বোঝাতে হবে যে, দুধদাঁত পড়ে যাওয়ার পর স্থায়ী দাঁত আসবে। এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এবং এতে কোনো ভয় পাওয়ার কিছু নেই। শিশুদের তাদের স্থায়ী দাঁত দেখিয়ে আশ্বস্ত করা যেতে পারে।
যখন দাঁত নড়তে শুরু করে, তখন শিশুকে ধীরে ধীরে পরিষ্কার আঙুল অথবা জিহ্বা দিয়ে দাঁত নড়ানোর জন্য উৎসাহিত করা উচিত, যেন দাঁতটি সহজে পড়ে যায়। তবে অতিরিক্ত জোরে কিছু করা উচিত নয়, কারণ এতে শিশু ব্যথা পেতে পারে এবং দাঁতের মাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
শিশুকে আগে থেকেই বলা উচিত যে, দাঁত পড়লে কিছুটা ব্যথা অথবা রক্তপাত হতে পারে, তবে এটি সাময়িক এবং দ্রুতই থেমে যাবে। দাঁত পড়ার পর শিশুকে পরিষ্কার পানি দিয়ে কুলি করাতে হবে, এবং কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলি করালে ব্যথা ও ফোলাভাব কমে যাবে।
যদি দাঁত পড়ার পর ব্যথা বা রক্তপাত বেশি হয়, তবে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে দাঁতের গোড়ায় কিছুক্ষণ চাপ দিতে হতে পারে। যদি ব্যথা তীব্র হয়, তাহলে সাধারণ ব্যথার ওষুধ দেওয়া যেতে পারে।
যদি দাঁত পড়ার এক ঘণ্টা পরও ব্যথা বা রক্তপাত না কমে, তবে অবশ্যই একজন দন্তচিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কিছু শিশু, যারা রক্ত জমাট বাধাতে সমস্যায় পড়ে বা যাদের হিমোফিলিয়া, ইমিউন থ্রম্বোসাইটোপেনিক পারপুরা বা রক্তপাতজনিত রোগের ঝুঁকি থাকে, তাদের ক্ষেত্রে দাঁত তোলার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।