শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি: আমাদের পরিচয় এবং মূল্য

শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি মানুষের মনকে করে উদার, কোমল এবং মানবিক। যে ব্যক্তি এই শিল্পকলার মাধ্যমে নিজেকে বিকশিত করে, সে কখনো সমাজের বিরুদ্ধে নয়, বরং সমাজের উন্নতির পথে কাজ করে। সাহিত্য আমাদেরকে বিভিন্ন যুগের এবং সমাজের চিত্র তুলে ধরার মাধ্যমে মানবমনের গভীরে প্রবাহিত অনুভূতিগুলোর সাথে পরিচিত করায়। এটি শুধুমাত্র ভাষার শিক্ষা নয়, বরং মানুষের মানবিক মূল্যবোধ, প্রেম, দুঃখ, সুখ, বিরহ, শোকের অনুভূতিও জাগ্রত করে।


যে কোন ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
৫০% পর্যন্ত ডিসকাউন্টে তৈরি করুন আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য
কর্পােরেট ওয়েবসাইট
ই-কমার্স ওয়েবসাইট অথবা নিউজপোর্টাল  ওয়েবসাইট।

এছাড়া সাহিত্য মানুষের মধ্যে সহানুভূতি এবং সামাজিক সচেতনতা বাড়ায়, যা এককভাবে মানবিক সম্পর্কগুলোর উন্নয়ন ঘটায়। তবে, আমাদের সমাজে বেশিরভাগ বাবা-মা শিল্প ও সাহিত্য চর্চাকে অনেক সময় গুরুত্ব দেন না। তারা মনে করেন, শুধু পড়াশোনা করলেই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিরাপদ, অথচ শিল্প ও সাহিত্য চর্চা তাদের চরিত্রের উন্নতি ঘটায় এবং তাদের সমাজের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলে।

অনেক অভিভাবক মনে করেন, সন্তান যদি গান শোনে বা সিনেমা দেখে, তবে তা তাদের খারাপ পথে পরিচালিত করবে। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। একটি শিশু যাতে সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে পারে, তাকে বিনোদনের প্রয়োজন রয়েছে। তাই, অবসর সময়ে শিশুদের ভালো গান শোনা, শিক্ষণীয় সিনেমা দেখা এবং সৃজনশীল কাজগুলোতে অংশগ্রহণ করানোর মাধ্যমে তাদের মননশীলতা বিকশিত হয়, যা তাদের সমাজ ও পৃথিবী সম্পর্কে সঠিক ধারণা গড়ে তোলে।

এছাড়া আমাদের সমাজে অনেক মানুষ আছেন যারা শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে বেঁচে আছেন, কিন্তু তাদের অবদান প্রায়শই উপেক্ষিত হয়। কামার, কুমার, বাউল, জেলে ইত্যাদি পেশার মানুষেরা সমাজে নানা কষ্টের মধ্যে জীবনযাপন করছেন, অথচ তারা আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক-বাহক। তাদের প্রতি সম্মান এবং সহায়তা জানানো প্রয়োজন, যাতে তারা সমাজে একটি স্থান পায় এবং নিজেদের সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে পারে।

শিল্প, সাহিত্য এবং সংস্কৃতি আমাদের ঐতিহ্য এবং পরিচয়ের প্রতীক। আমাদের সভ্যতার সূচনা থেকেই, যখন মানুষ বড় বড় সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, তখন শিল্প ও সাহিত্য তাদের প্রেরণা এবং সাহস জুগিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের সঙ্গীত শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করেছিলেন, আর চিত্রশিল্পীরা মুক্তিযুদ্ধের ছবি আঁকেছিলেন, যা বর্তমান প্রজন্মের জন্য ইতিহাসের এক অমূল্য দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে।

তাহলে, আমাদের সমাজের স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে যেতে হলে, আমাদের শিল্প, সাহিত্য এবং সংস্কৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করা উচিত। এই মূল্যবোধগুলো আমাদের পরিচয়, সমাজ এবং ইতিহাসের অঙ্গ। এটি টিকিয়ে রাখতে হলে, সবাইকে তাদের সংস্কৃতির প্রতি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।