ফ্যাশন সচেতনতা এখন শুধু নারীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং পুরুষদের মধ্যেও দিন দিন এর প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। তবে অনেকেই বুঝতে পারেন না, কীভাবে আরও স্মার্ট এবং স্টাইলিশ হয়ে নিজেদের উপস্থাপন করবেন। কিছু সাধারণ ভুলের কারণে অনেকেই ফ্যাশনেবল লুক পেতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাই শুধুমাত্র ট্রেন্ড অনুসরণ করলেই স্টাইলিস্ট হওয়া যায় না—ফ্যাশন আসলে একটি শৈলী, যা আপনার ব্যক্তিত্বের সাথে মিলিত হয়ে আত্মবিশ্বাস তৈরি করে।
ফ্যাশনেবল হতে হলে আপনাকে শুধু পোশাকের দিকে নজর দিতে হবে না, নিজের স্টাইলও নিশ্চিত করতে হবে যেন আপনার নিজস্বতা ম্লান না হয়। যে পোশাক আপনি পরবেন, তাতে আপনিই সবচেয়ে বেশি আরামদায়ক ও আত্মবিশ্বাসী বোধ করবেন।
এখানে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস দেওয়া হলো, যা আপনাকে ফ্যাশনে আরও এগিয়ে রাখবে:
১. দেহের সাথে মানানসই পোশাক বেছে নিন
আপনার শরীরের গঠন অনুযায়ী পোশাক নির্বাচন করুন। খুব আঁটসাঁট বা খুব ঢিলেঢালা পোশাক পরবেন না। সঠিক ফিটিং পোশাক আপনার ব্যক্তিত্বকে সঠিকভাবে ফুটিয়ে তুলবে। তাই পোশাকের সাইজ এমন হওয়া উচিত যাতে আপনার গড়ন এবং শখের সাথে মানানসই থাকে।
২. সাজপোশাকে ভারসাম্য রাখুন
রঙ এবং প্যাটার্নের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে হবে। একদিকে যদি খুব ভরাট প্রিন্টের শার্ট পরেন, তবে প্যান্টের ডিজাইন বা প্যাটার্নটি খুব সরল রাখুন। না হলে পুরো সাজটি বিশৃঙ্খল মনে হবে।
৩. নিজেকে গ্রুমিং করুন
ফ্যাশনেবল পোশাক পরলেই কিন্তু লুক পারফেক্ট হয় না। তাই হেয়ারস্টাইল, ফেসিয়াল হেয়ার এবং স্কিন কেয়ারেও যত্ন নেওয়া উচিত। পরিচ্ছন্ন এবং পরিপাটি গ্রুমিং আপনার সাজকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলবে।
৪. জুতা ও বেল্টে অভিজাত্য বজায় রাখুন
ফ্যাশন সচেতন পুরুষেরা জানেন, জুতা এবং বেল্টের রঙ এবং স্টাইল যেন এক হতে হয়। একদম মিলিয়ে লেদারের জুতা পরলে, একই রঙের লেদারের বেল্ট পরুন। এটি আপনার সাজকে আরও পলিশড এবং পরিপাটি দেখাবে।
৫. মানানসই মোজা বেছে নিন
অফিস বা ফরমাল পরিবেশে কখনও উজ্জ্বল রঙের মোজা পরবেন না। এমন মোজা পরুন যা আপনার প্যান্ট বা জুতার রঙের সাথে মেলে, যাতে লুকটি প্রফেশনাল এবং স্টাইলিশ দেখায়। ক্যাজুয়াল পরিবেশে কিছুটা বেশি খোলামেলা বা উজ্জ্বল রঙের মোজা পরতে পারেন, তবে ফরমাল অনুষ্ঠানে সেগুলি পরা উচিত নয়।
৬. ড্রেসকোড মেনে চলুন
ফরমাল বা ক্যাজুয়াল অনুষ্ঠানে পোশাকের সঠিক নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফরমাল অনুষ্ঠানে ক্যাজুয়াল পোশাক পরা বা ঘরোয়া দাওয়াতে খুব গম্ভীর সাজে হাজির হওয়া আপনার সাজকে বেমানান করে তুলতে পারে। তাই অনুষ্ঠানের কোড অনুযায়ী পোশাক পরা উচিত।
৭. নিখুঁত সেলাই দিয়ে পরিপাটি লুক তৈরি করুন
কাস্টমাইজড পোশাক বা নিখুঁত সেলাই করা পোশাক পরলে আপনার সাজ অনেক বেশি পরিপাটি এবং পলিশড দেখায়। প্যান্ট, শার্ট বা হাতার দৈর্ঘ্য এবং ফিটিং যেন সঠিক হয়, তা নিশ্চিত করুন।
৮. অ্যাকসেসরিজের ব্যবহার পরিমিত রাখুন
ফ্যাশনের অন্যান্য আনুষঙ্গিক বস্তু যেমন ঘড়ি, সানগ্লাস, ওয়ালেট, স্লিংব্যাগ, ফোন ইত্যাদি একত্রে ব্যবহার করা হলেও, অতিরিক্ত অ্যাকসেসরিজ ব্যবহার করা উচিত নয়। পোশাকের সাথে সামঞ্জস্য রেখে অল্প কিছু অ্যাকসেসরিজ পরুন।
৯. পরিষ্কার ও সুরক্ষিত জুতা পরুন
দামি জুতা পরলেই তা আপনার সাজকে স্মার্ট করে না, যদি সেটি ময়লা বা পুরানো হয়। প্রতিদিন জুতা পরিষ্কার রাখুন এবং জুতো ও পোশাকের রঙের সঙ্গে সমন্বয় করে পরুন।
১০. স্বাচ্ছন্দ্য ও আত্মবিশ্বাস বাড়ান
সবশেষে, আপনি যা পরবেন, তাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শুধু ফ্যাশন ট্রেন্ডের পেছনে না ছুটে, এমন পোশাক নির্বাচন করুন যা আপনার আত্মবিশ্বাস এবং ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তোলে। আত্মবিশ্বাসীভাবে পরিধান করা পোশাকই আসলেই আপনাকে স্টাইলিশ এবং আকর্ষণীয় করে তুলবে।
এভাবে ফ্যাশন এবং স্টাইলের প্রতি সঠিক মনোভাব এবং কিছু ছোট ছোট কৌশল অনুসরণ করলে আপনি সহজেই স্মার্ট এবং স্টাইলিশ হয়ে উঠতে পারবেন।