“অভিবাসী পরিবারের সন্তান কমলার সামনে ইতিহাস সৃষ্টি করার সম্ভাবনা”


যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনের রানিং মেট কমলা হ্যারিস ছিলেন। রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করে বাইডেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে নিয়ম অনুযায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট হন কমলা।


যে কোন ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
৫০% পর্যন্ত ডিসকাউন্টে তৈরি করুন আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য
কর্পােরেট ওয়েবসাইট
ই-কমার্স ওয়েবসাইট অথবা নিউজপোর্টাল  ওয়েবসাইট।

ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলা দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস তৈরি করেন: তিনি প্রথম নারী এবং প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা যিনি এই পদে আসীন হন।

১৯৬৪ সালের ২০ অক্টোবর ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন কমলা দেবী হ্যারিস। তার মা, শ্যামলা গোপালন, ছিলেন একজন ক্যানসার গবেষক এবং নাগরিক অধিকার আন্দোলনের একজন সক্রিয় সদস্য। তার বাবা, ডোনাল্ড জ্যাসপার হ্যারিস, ছিলেন একজন জ্যামাইকান-আমেরিকান অর্থনীতিবিদ।

কমলার শৈশব কেটেছে মায়ের সঙ্গে সান ফ্রান্সিসকোতে, যেখানে শ্যামলা ভারতীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত করে মেয়েকে বড় করেছেন এবং নাগরিক অধিকার আন্দোলনের অনুষ্ঠানে নিয়ে যেতেন। এ সময়েই কমলার মনে প্রভাব ফেলেন শার্লি চিশলম ও গায়িকা নিনা সিমোন। তিনি তার মাকে নিজের জীবনের ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে মনে করেন।


কমলার প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার প্রক্রিয়াটি নাটকীয় ছিল। প্রধান দুটি দল—ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান—প্রার্থিতা চূড়ান্ত করতে একটি দীর্ঘ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, যা ১২ থেকে ১৮ মাস সময় নেয়। বাইডেন প্রায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হন, এবং কমলা তাকে সমর্থন দেন। তবে বাইডেন প্রথম বিতর্কে ব্যর্থতার পর চাপের মুখে পদত্যাগ করেন, এবং নিজের দলের প্রার্থী হিসেবে কমলার নাম প্রস্তাব করেন। ফলে কমলা মাত্র চার মাস প্রচারণার সময় পেয়েছিলেন—যা ইতিহাসে সবচেয়ে কম।

২০১৯ সালে কমলা সিনেটর থাকাকালে একবার প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু প্রাথমিক বাছাইতে আটকে পড়েন। তবে চার মাসের প্রচারণায় তিনি টেলিভিশন বিতর্কে সাফল্য অর্জন করেন এবং জনপ্রিয়তা পান। ট্রাম্পের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি দারুণ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন এবং বেশ কয়েকটি জরিপে ট্রাম্পের চেয়ে সামান্য এগিয়ে ছিলেন।

কমলার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে শ্রমিকদের কাজের স্বাধীনতা বাড়ানো, মাতৃত্ব-পিতৃত্বকালীন ছুটি বৃদ্ধি এবং নারীদের প্রজনন ও গর্ভপাতের অধিকার সমর্থন করা।


কমলা আইনশাস্ত্রে স্নাতক করেছেন। তিনি হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন এবং পরে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। স্নাতক শেষ করে ক্যালিফোর্নিয়ায় কৌঁসুলি হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং অল্প সময়ের মধ্যে সেখানকার নামী আইনজীবী হয়ে ওঠেন। ২০১৭ সালে তিনি প্রথমবারের মতো সিনেটর নির্বাচিত হন।

কমলা ২০১৪ সালে ৪৮ বছর বয়সে ডগ এমহফের সঙ্গে বিয়ে করেন। ডগের প্রথম পক্ষের দুটি সন্তান রয়েছে, যারা কমলাকে ‘মুমালা’ বলে ডাকে। কমলা একবার তার পরিবার সম্পর্কে বলেছেন, “আমরা রবিবার একসঙ্গে নৈশভোজে বসি। কোল টেবিল সাজায় এবং সংগীত নির্বাচন করে, এলা দারুণ মিষ্টিজাতীয় খাবার বানায়, আর আমি রান্না করি।”

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।