“ঢাকায় ছিনতাই ও ডাকাতির প্রবণতা: ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা কোনগুলো?”


রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যানে গত ১০ অক্টোবর রাতে ছিনতাইকারীরা রবিউল ইসলাম নামে এক নিরাপত্তাকর্মীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। এরপর ১৮ অক্টোবর দুপুরে ইডেন কলেজের উপাধ্যক্ষ মমতাজ শাহানারার বাসায় ডাকাতি হয়, যেখানে ৯-১০ জন ডাকাত অস্ত্রের মুখে তাকে জিম্মি করে ৮৩ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১৫ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।


যে কোন ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
৫০% পর্যন্ত ডিসকাউন্টে তৈরি করুন আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য
কর্পােরেট ওয়েবসাইট
ই-কমার্স ওয়েবসাইট অথবা নিউজপোর্টাল  ওয়েবসাইট।

এই ঘটনার মাধ্যমে মোহাম্মদপুর ও উত্তরার এলাকায় অপরাধীদের কর্মকাণ্ডের বেপরোয়া প্রকৃতি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ঢাকায় ১৯২টি খুনের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে মোহাম্মদপুরেই ২১টি। শহরের প্রধান সড়ক থেকে অলিগলি ও অভিজাত পাড়ায়ও মানুষ ছিনতাই ও ডাকাতির শিকার হচ্ছেন, ফলে নগরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বেড়ে গেছে। মোহাম্মদপুর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দারা গত শনিবার থানার সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।


মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান জানান, বিভিন্ন কারণে মোহাম্মদপুর অপরাধপ্রবণ এলাকা হয়ে উঠেছে, এবং জনবল সংকটের কারণে পুলিশ সেখানে যথাযথ টহল দিতে পারছে না।

ডিএমপির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে (অক্টোবরের ২৩ তারিখ পর্যন্ত) ১৯২ জন খুন হয়েছেন। মোহাম্মদপুরের পরিসংখ্যানও উদ্বেগজনক; সেখানে গত বছরে ১১টি খুনের ঘটনা ছিল, যা এই বছরে ২১টি পৌঁছেছে। একইভাবে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা বেড়ে গেছে, যদিও বেশিরভাগ ভুক্তভোগী মামলা করতে চান না।

পুলিশের সূত্র অনুযায়ী, ৫ আগস্ট থেকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশে পুলিশি কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা বেড়ে গেছে। পুলিশ, ভুক্তভোগী এবং হাসপাতাল সূত্র জানায়, অনেকে হয়রানির ভয়ে থানায় যেতে চান না, ফলে প্রকৃত ঘটনার চেয়ে থানায় রেকর্ড করা সংখ্যাটি অনেক কম।


সাম্প্রতিক ঘটনার মধ্যে ১১ অক্টোবর রাতে মোহাম্মদপুরে ব্যবসায়ী আবু বকরের বাসায় ডাকাতি করা হয়, যেখানে সেনাবাহিনী ও র‌্যাবের পোশাক পরা ডাকাতেরা ৭৫ লাখ টাকা ও ৭০ ভরি সোনা লুট করে নিয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঢাকার থানাগুলোতে পুলিশ বাহিনীর বড় অংশই ঢাকার বাইরে থেকে আসা, যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে সমস্যা সৃষ্টি করছে।

গত শনিবার স্থানীয়দের প্রতিবাদের পর যৌথ অভিযান শুরু হয়, যার ফলে ১০৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে, ঢাকার অন্যান্য এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। পুলিশ ও র‍্যাব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে এবং আগামীতে আরও অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।