“১০ কিলোমিটার ব্যবধানে সবজির দাম ৩-৪ গুণ বৃদ্ধি”


কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সৈয়দপুরের মনির হোসেন, রহমত আলীসহ কয়েকজন কৃষক গতকাল বুধবার সকালে নিমসার বাজারে প্রতি কেজি ধনেপাতা ৭০-৮০ ও কাঁচা মরিচ ৮০-১৫০ টাকায় বিক্রি করে যান। বাজারের মো. নজরুল মিয়া ও ইকরাম মুন্সীর মতো আড়তদারেরা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে কেজিপ্রতি ধনেপাতা ১০০ ও কাঁচা মরিচ ২০০-২৩০ টাকায় বিক্রি করেন।


যে কোন ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
৫০% পর্যন্ত ডিসকাউন্টে তৈরি করুন আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য
কর্পােরেট ওয়েবসাইট
ই-কমার্স ওয়েবসাইট অথবা নিউজপোর্টাল  ওয়েবসাইট।

একই দিন দুপুরে নিমসার বাজার থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, খুচরা সবজি বিক্রেতা নূর হোসেন ধনেপাতা বিক্রি করছেন ৩০০ টাকা কেজি দরে। কাঁচা মরিচের দাম চাওয়া হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি। এমন দর নগরীর সব কাঁচাবাজারে।

নিমসার বাজার দেশের অন্যতম বৃহৎ সবজির বাজার। কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এ বাজারে পণ্য কেনাবেচা হয়, যা চলে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত। কিন্তু এখানে যে দামে সবজি বিক্রি হয়, তা কয়েক হাত ঘুরে সাধারণ ক্রেতার কাছে গিয়ে কয়েক গুণ দাম বেড়ে যায়; এ ক্ষেত্রে দূরত্ব যত কমই হোক না কেন।


নিমসার বাজারের জাবালে নূর বাণিজ্যালয়ের মো. সুমন মিয়া, নোয়াখালী মাইজদী বাণিজ্যালয়ের আব্দুর রহমান, লিটন বাণিজ্যালয়ের মো. শাহালম মিয়া ও আনন্দ বাণিজ্যালয়ের নজরুল ইসলাম জানান, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারি ব্যবসায়ী আড়তে সবজি নিয়ে আসেন। বাজারে যখন যে দাম থাকে, তাঁরা সে দামে বিক্রি করে দেন। তাঁরা শুধু নির্দিষ্ট একটি কমিশন রাখেন।

ইসলামিয়া বাণিজ্যালয়ের মহাজন নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মালের জোগান বেশি আসলে দাম কমে যায়। রাতে এক দর, আবার সকালে মাল বেশি আসলে দাম কমে যায়। বন্যা-পূজাসহ বিভিন্ন কারণে জোগান কম ছিল, তাই দাম বেড়েছে। এখন অনেকটা কমতে শুরু করেছে।’ ঢাকা বাণিজ্যালয়ের ইকরাম মুন্সী বলেন, গত সপ্তাহে দাম অনেকটা বেশি ছিল। এখন কমতে শুরু করেছে। কাঁচা মরিচ ৩০০ থেকে ২০০ টাকায় নেমে এসেছে। এভাবে সবকিছুরই দাম কমতে শুরু করেছে।

খুচরা বাজারে দাম বেশি হওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে নগরীর নিউমার্কেটের সবজি বিক্রেতা মো. এনাম বলেন, ‘আমরা যখন যে দামে কিনে আনি, এর সঙ্গে পরিবহনসহ অন্যান্য খরচ যোগ করে সামান্য লাভে বিক্রি করি। সব ক্রেতাই আমাদের পরিচিত। তাই অধিক মুনাফা চিন্তা করতে পারি না।’ 


তবে নগরীর রাজগঞ্জ চকবাজার ও রানীর বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, প্রতিটি বাজারেই সিন্ডিকেট রয়েছে। সবজি বাজারে আসার আগে সিন্ডিকেট দাম নির্ধারণ করে দেয়। কেউ নির্ধারিত দামের চেয়ে কমে বিক্রি করতে পারেন না। খুচরা বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের তারাই নিয়ন্ত্রণ করে।

এ নিয়ে কথা হলে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কুমিল্লার সহকারী পরিচালক আছাদুল ইসলাম বলেন, ‘জেলার ১৭টি উপজেলায় আমি একমাত্র কর্মকর্তা বাজার তদারক করছি। আমাদের লোকবলের সংকট রয়েছে। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় নিমসার কাঁচাবাজারসহ নগরীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে তদারক অভিযান পরিচালনা করেছি। এ সময় ব্যবসায়ীদের ক্রয় রসিদ যাচাইবাছাই করে অযাচিত ও অতিরিক্ত দাম রাখার দায়ে জরিমানাসহ সতর্ক করেছি। এ বিষয়ে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।