বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যেখানে চারটি প্রধান চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়েছে: রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বহিঃস্থ খাতের চাপ, এবং আর্থিক খাতের দুর্বলতা। এসব কারণে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে। তবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এটি ৫.৫ শতাংশে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বন্যার প্রভাব, বিনিয়োগের অভাব এবং শিল্প খাতে দুর্বল প্রবৃদ্ধির ফলে কৃষিতে মাঝারি মানের প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশিত। এ প্রসঙ্গে, মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, গত কিছু বছরে বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারেনি, যদিও প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক তরুণ কর্মশক্তিতে প্রবেশ করছে। বিশেষ করে শিক্ষিত ও শহুরে বেকারত্ব বেড়ে যাওয়াটা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি উচ্চ মূল্যস্ফীতিকে বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুতর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন, যা খাদ্য মূল্যস্ফীতির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জীবনমানকে প্রভাবিত করছে। বৈষম্যও বাড়ছে, যা কমানোর জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি এবং আর্থিক খাতে সংস্কারের প্রয়োজন।
বিশ্বব্যাংক জানায়, বাংলাদেশে ৮৪.৯ শতাংশ কর্মসংস্থান এখনও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে রয়েছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ সমস্যা বাড়ছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক সুদের হার বৃদ্ধি করেছে, ফলে বেসরকারি খাতে ঋণ গ্রহণ কমেছে।
বিশ্বব্যাংক চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৩.২ শতাংশ থেকে ৫.২ শতাংশের মধ্যে থাকতে পারে এবং মধ্যবর্তী পয়েন্ট হিসেবে ৪ শতাংশ দেখছে। সরকারি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এই পূর্বাভাস ২.৭৫ শতাংশ কম। কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে এটি হবে দেশের সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি।
এছাড়া, বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে একটি গ্যাপ রয়েছে, যা মোকাবেলা করতে রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং শিক্ষার মান উন্নয়নের প্রয়োজন। অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ে বর্তমান পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে খারাপ।