ঢাকার সড়কে যানবাহনের গতি কমেছে: এক দশকের তথ্য
দেড় দশকে ঢাকার সড়কে যানবাহনের গতি ঘণ্টায় ১৬ কিলোমিটার কমে গেছে। ২০০৭ সালে এই গতি ছিল ২১ কিলোমিটার, যা এখন মাত্র ৪.৮ কিলোমিটারে নেমে এসেছে। অপরদিকে, বর্তমানে মানুষের হাঁটার গতি ঘণ্টায় ৪.১৫ কিলোমিটার। ঢাকার যানজট নিয়ে আলোচনা সভায় এই তথ্য তুলে ধরেন ওয়ার্ক ফর অ্যা বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন আহম্মেদ।
মঙ্গলবার ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘যানজটের অভিশাপ থেকে পরিত্রাণে করণীয়’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত সভায় নগর পরিকল্পনাবিদদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্সের (বিআইপি) সভাপতি অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান মন্তব্য করেন, যদি অগ্রাধিকার ঠিক করে কাজ করা হয়, তাহলে ঢাকার যানজট তিন বছরে দূর করা সম্ভব। তিনি বলেন, প্রধান রুটগুলোতে মানসম্মত গণপরিবহন চালু করা, ব্যক্তিগত গাড়ির অবাধ চলাচল বন্ধ করা এবং ফুটপাত খালি রাখলে যানজট পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান আরও বলেন, যানজট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলি জানা থাকা সত্ত্বেও সরকারগুলো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের পরও ঢাকায় গাড়ির গতি কমেছে। পূর্ববর্তী সরকারের প্রকল্পগুলির মধ্যে বৃহত্তর প্রকল্পগুলোতেই বেশি মনোযোগ ছিল, যেগুলোতে রাজনৈতিক লাভ বেশি ছিল।
তিনি বলেন, প্রথমে গুরুত্বপূর্ণ রুটগুলোতে মানসম্মত গণপরিবহন চালু করা প্রয়োজন। কয়েক বছর আগে পাঁচ হাজার বাস নামানোর পরিকল্পনার কথা শোনা গিয়েছিল; তবে প্রথম পর্যায়ে এক হাজার বাস চালু করা যেতে পারে।
অধ্যাপক খান গলির ভেতরে প্রবেশযোগ্য কমিউটার সার্ভিস চালু করার পরামর্শ দেন, যা অলিগলিতে কিছু রিকশার সংখ্যা কমাতে সাহায্য করবে। তিনি প্রশ্ন তুলেন, যখন মেট্রোরেলের বগি জাপান থেকে আনা হচ্ছে, তখন সরকার কেন বাস আনার ব্যাপারে নিষ্ক্রিয়।
তিনি আরও পরামর্শ দেন, যানজট কমাতে হলে প্রাইভেটকারের অবাধ চলাচল বন্ধ করতে হবে। তার মতে, বিশ্বের কোনো মেগা শহরে এভাবে প্রাইভেটকার চলাচলের স্বাধীনতা নেই।
ট্রাফিকস নামক সংগঠনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম তার লিখিত উপস্থাপনায় অতীতে সড়কের সিগন্যাল ব্যর্থতার কারণ এবং ঢাকা শহরে ট্রাফিক সিগন্যালের মান সম্পর্কে আলোচনা করেন।
ওয়ার্ক ফর অ্যা বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের হেড অব প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আইনজীবী ও নীতি বিশ্লেষক সৈয়দ মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজের নির্বাহী সদস্য মারুফ হোসেন, ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের কারিগরি পরামর্শক আমিনুল ইসলাম এবং মাদক বিরোধী সংগঠন প্রত্যাশার সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদসহ আরও অনেকে।