১৯৮৫ সালে শুরু হওয়া টোকিও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ৩৭তম আসর চলতি মাসের ২৮ তারিখে শুরু হচ্ছে। এই বছরের উৎসবটি ১০ দিন ধরে চলবে, যেখানে জমা পড়েছে মোট ২,০২৩টি ছবি, যা গত বছরের তুলনায় ৮১টি বেশি। ১১০টি দেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা ও পরিচালকরা এই উৎসবে মূল প্রতিযোগিতা ও অন্যান্য বিভাগের জন্য তাদের নির্মিত ছবি পাঠিয়েছেন। ফলে টোকিও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পরিধি ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে এবং ২০২০ সালের করোনা সংকটের কারণে ঘটে যাওয়া সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠছে।
উৎসবটি শুরু হয়েছিল দ্বিবার্ষিক আয়োজন হিসেবে, পরে এটি বার্ষিক উৎসবে পরিণত হয়। তাই, এবারের আয়োজনকে ৩৭তম হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
এশিয়ার প্রধান চলচ্চিত্র উৎসবগুলোর মধ্যে টোকিও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবকে দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান চলচ্চিত্র উৎসবের সঙ্গে তুলনা করা হয়। তবে বুসান উৎসব মূলত এশিয়ার বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্রের উপর আলোকপাত করে, যেখানে টোকিও উৎসব সার্বিকভাবে আন্তর্জাতিক।
টোকিও চলচ্চিত্র উৎসবের মূল আকর্ষণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগ। এবারে ১৫টি ছবি নির্বাচিত হয়েছে, যার মধ্যে জাপান ও চীনের ৩টি করে ছবি এবং কলম্বিয়া, কাজাখস্তান, ব্রাজিল, ফ্রান্স, তাইওয়ান, পর্তুগাল, হংকং, স্লোভানিয়া ও রুমানিয়ার একটি করে ছবি রয়েছে। হংকংয়ের বিখ্যাত অভিনেতা টনি লিউংয়ের নেতৃত্বে একটি পাঁচ সদস্যের জুরি বোর্ড উৎসবের শেষে সেরা ছবির নাম ঘোষণা করবে।
উৎসবের আরেকটি আকর্ষণীয় বিভাগ হচ্ছে “এশিয়ান ফিউচার,” যা এশিয়ার নবীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত। এখানে দশটি ছবি নির্বাচিত হয়েছে, যা নির্মাতাদের প্রথম বা দ্বিতীয় ছবি হতে হবে। এবারের নির্বাচিত ছবিগুলোর মধ্যে ইরান ও জাপানের দুটি করে ছবি ছাড়াও তুরস্ক, মালয়েশিয়া, হংকং, চীন, ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডসের সহযোগিতায় আফগানিস্তানের এক পরিচালকের ছবি রয়েছে।
এছাড়া, এনিমেশন বিভাগ এবং জাপানি চলচ্চিত্রের জন্য “নিপ্পন সিনেমা নাও” বিভাগও থাকবে। বিশ্বের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কারপ্রাপ্ত কিছু ছবি এবং “ওয়ার্ল্ড ফোকাস” বিভাগে উল্লেখযোগ্য ছবির প্রদর্শনীও হবে।
এই বছরের উৎসবের মূল সঞ্চালক হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জাপানি অভিনেত্রী কিকুচি রিঙ্কো। তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিভিন্ন দেশের ছবি দেখে তিনি তাঁর অভিনয়ে তাদের শ্রেষ্ঠতার উদাহরণ তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। এবারের চলচ্চিত্র উৎসবের পোস্টারে তাঁর ছবি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
উৎসব কমিটির সভাপতি আন্দো হিরোইয়াসু জানান, এবারের উৎসবের তিনটি প্রধান দিক হল: আন্তর্জাতিক আদান-প্রদান শক্তিশালী করা, চলচ্চিত্রশিল্পের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে প্রতিভাবান যুবকদের বিকাশে সহায়তা করা এবং নারীর ক্ষমতায়নকে সমর্থন করার জন্য বিশেষ কর্মসূচি চালু করা। এই উৎসবে নারীর ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত একটি বিভাগও যুক্ত করা হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন দেশের নারী নির্মাতাদের ছবিগুলো প্রদর্শিত হবে।